জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। একই সঙ্গে মুক্তি পেয়েছেন নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ও জামাতা মোহাম্মদ সফদার। উচ্চ আদালত তাঁদের সাজা স্থগিতের আদেশ দেওয়ার পর বুধবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগার থেকে মুক্তি পান তাঁরা।
ডন-এর খবরে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দল পিএমএল-এনের সভাপতি শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা বুধবার সন্ধ্যায় আদিয়ালা কারাগারে পৌঁছান। সেখানে তাঁরা নওয়াজ শরিফকে স্বাগত জানান। এ সময় কারাগারের সামনে দলটির অসংখ্য সমর্থক জড়ো হয়।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, স্ত্রী কুলসুম নওয়াজের মৃত্যুর এক সপ্তাহের মধ্যে মুক্তি পেলেন নওয়াজ শরিফ। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কুলসুম। ওই সময় কয়েক দিনের জন্য প্যারোলে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন পাকিস্তানের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
বুধবারই নওয়াজের বিরুদ্ধে কারাদণ্ডাদেশের রায় স্থগিত করেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। নওয়াজের সঙ্গে তাঁর মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ও মরিয়মের স্বামী মোহাম্মদ সফদারের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশের রায়ও স্থগিত করা হয়। আদালত বলেন, অকাট্য দলিল দেখাতে না পারায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ‘বেনিফিট অব ডাউট’ পেতে পারেন। এরপরই সাজার রায় স্থগিতের ঘোষণা আসে।
ডন জানিয়েছে, কারাগার থেকে বের হওয়ার পর নওয়াজকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নূর খান বিমানঘাঁটিতে নেওয়া হয়। এর পর একটি ব্যক্তিগত হেলিকপ্টার লাহোরের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। এরই মধ্যে লাহোর বিমানবন্দরে দলীয় সমর্থকেরা জড়ো হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
নব্বইয়ের দশকে লন্ডনের পার্ক লেনের অ্যাভেনফিল্ড হাউসে চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনে নওয়াজের পরিবার। তদন্তের পর পাকিস্তানের জাতীয় জবাবদিহি সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরোর (এনএবি) কৌঁসুলিরা আদালতকে জানান, নওয়াজের পরিবার এই ফ্ল্যাটগুলি কেনার অর্থের বৈধ আয় দেখাতে পারেননি। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ দিয়ে এসব ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে। এই মামলায় দণ্ড দেওয়া হয় নওয়াজ, মরিয়ম ও সফদারকে।
গত ৬ জুলাই নওয়াজ শরিফকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। তাঁর মেয়ে মরিয়ম নওয়াজকে সাত বছর ও সফদারকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন দেশটির অ্যাকাউন্টিবিলিটি আদালত। পাশাপাশি নওয়াজকে ৮০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড ও মরিয়মকে ২০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড জরিমানা করা হয়। ১২ জুলাই নওয়াজ ও মরিয়ম লন্ডন থেকে লাহোরে ফিরলে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সফদারকে তার আগেই গ্রেপ্তার করে কারাগারে নেওয়া হয়েছিল।