প্রকাশিত: ১৮/০১/২০২২ ৯:৫৭ এএম
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি
ইসলাম বৈরাগ্যতা সমর্থন করে না। প্রকৃত মুমিনরা কখনো বেকারত্বের গ্লানি মাথায় নিয়ে ঘুরতে পারে না। কারণ কোরআন-হাদিসে ইবাদতের পাশাপাশি জীবিকা অর্জনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জীবিকা অর্জনের জন্য আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসুলরাও বিভিন্ন পেশা অবলম্বন করেছেন।

আজ আমরা জানব রাসুল (সা.)-এর যুগে আরবে কী কী পেশা ছিল।
ব্যবসা : কুরাইশদের অন্যতম পেশা ছিল ব্যবসা-বাণিজ্য। ব্যবসার জগতে গোটা আরবজুড়ে তাদের খ্যাতি ছিল। রাসুল (সা.) নিজেও ব্যবসা করেছেন। হালাল পন্থায় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি উম্মতকে উৎসাহ দিয়েছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীরা পরকালে নবী, শহীদ ও সিদ্দিকদের সঙ্গে থাকবে। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১২০৯)

শিক্ষকতা : রাসুল (সা.) নিজেও ছিলেন একজন শিক্ষক। যিনি গোটা বিশ্ববাসীকে আলোর পথ দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২৯)

শিকার : রাসুল (সা.)-এর যুগে আরবে কেউ কেউ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তৎকালীন যুগে আরবের দক্ষ শিকারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন হামজা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব। ইহরাম অবস্থায় শিকার করা নিষিদ্ধ। তাই পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করার মাধ্যমে এই পেশার লোকদের ইহরাম অবস্থায় শিকার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা, আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করবেন শিকারের এমন বস্তু দ্বারা, যা তোমাদের হাত ও বর্শা নাগাল পায়, এটা জেনে নেওয়ার জন্য যে অদৃশ্য থেকেও কে আল্লাহকে ভয় করে। কাজেই এরপর কেউ সীমা লঙ্ঘন করলে তার জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি রয়েছে। (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৯৪)

কাঠ সংগ্রহ : রাসুল (সা.)-এর যুগে কিছু মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন কাঠ কেটে। তিনি নিজেও মানুষকে এই পেশা অবলম্বনের প্রতি উৎসাহিত করেছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যার হাতে আমার জীবন, সেই সত্তার কসম! তোমাদের মধ্যে কারো রশি নিয়ে কাঠ সংগ্রহ করে পিঠে করে বয়ে আনা কারো কাছে ভিক্ষা করার চেয়ে উত্তম, চাই সে দিক বা না দিক। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৪৭০)

পশুপালন : রাসুল (সা.) নিজেও এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা এমন কোনো নবী প্রেরণ করেননি, যিনি বকরি চরাননি। তখন সাহাবিরা বলেন, আপনিও? তিনি বলেন, হ্যাঁ; আমি কয়েক কিরাতের (মুদ্রা) বিনিময়ে মক্কাবাসীদের ছাগল চরাতাম। (বুখারি, হাদিস : ২২৬২)

চাষাবাদ : চাষাবাদ মানব সভ্যতার প্রাচীনতম একটি পেশা। জীবনের প্রয়োজনে যুগ যুগ ধরে এই পেশা টিকে আছে। ইসলাম ধর্মেও এই পেশার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে মহান আল্লাহ এই পেশার লোকদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তিনিই সৃষ্টি করেছেন এমন বাগানসমূহ যার কিছু মাচানির্ভর অপর কিছু মাচানির্ভর নয় এবং খেজুর বৃক্ষ ও শস্য, যার স্বাদ বিভিন্ন রকম, আর জয়তুন ও আনার, এগুলো একটি অন্যটির মতো, আবার বিভিন্ন রূপেরও। যখন এগুলো ফলবান হবে তখন সেগুলোর ফল খাবে এবং ফসল তোলার দিন সেসবের হক প্রদান করবে। আর অপচয় করবে না; নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না। (সুরা : আনআম, আয়াত : ১৪১)

অস্ত্র উৎপাদন : একটি দেশের সমৃদ্ধির জন্য যেমন খাদ্য শস্য উৎপাদন জরুরি, তেমনি দেশের নিরাপত্তার জন্য সামরিক শক্তি অর্জনও আবশ্যক। রাসুল (সা.)-এর যুগে আরবের লোকেরা অস্ত্র উৎপাদনেও বেশ পারদর্শী ছিল।

সুতা কাটা : বস্ত্রশিল্পে আরবরা ছিল বিশ্বের অন্য সব দেশের পেছনে। কাপড় বুনন, চামড়া পাকা করা ইত্যাদি যেসব শিল্পের খবর জানা যায়, তার বেশির হতো প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনে। সিরিয়া ও হিরা বা ইরাকে। সমগ্র আরবে নারীরা সুতা কাটার কাজ করত। (আর রাহিকুল মাখতুম, পৃষ্ঠা : ৬১)

পাঠকের মতামত

তুরস্কে কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশি হাফেজ

ইসলামী ঐতিহ্যের স্মৃতি বিজড়িত তুরস্কে অনুষ্ঠিত ৯ম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশি হাফেজ, ...