নাসির উদ্দিন, কুতুপালং কেন্দ্রীক মিয়ানমারের চোরাই গরু মহিষ পাচারের অন্যতম সিন্ডিকেট। আমদানি নিষিদ্ধ অবৈধ বার্মিজ সিগারেট পাচারের স্বঘোষিত ডিলার। র্যাবের হাতে সিগারেটের বিশাল চালান নিয়ে গ্রেফতার হয়েছিল এই নাসির উদ্দিন। জামিনে বের হয়ে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে ফের একক আধিপত্য বিস্তার করে নেন তিনি।
উখিয়া উপজেলার রাজা পালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুপালংয়ের পূর্বপাড়া গ্রামের নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে রয়েছে অবৈধ ব্যবসার পাহাড় সমান অভিযোগ। মিয়ানমারের চোরাই পথে গরু মহিষের ব্যবসা সহ তুমব্রু ঘুমধুম সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে সার, খাদ্য সামগ্রী ও মোবাইল পাচার একক নিয়ন্ত্রণে । তার সাথে সখ্যতা রয়েছে মিয়ানমারের চোরা চালান গডফাদার নবী হোসেন বাহিনীর সিন্ডিকেট সদস্য ও মাস্টার মুন্না বাহিনীর সহযোগীদের সাথে।
নাসিরের গুধাম থেকে র্যারের অভিযানে উদ্ধারকৃত মিয়ানমারের অবৈধ সিগারেট।
কুতুপালং তার বাড়ি হওয়ায় সুবাদে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেটের সাথে নাসিরের সাথে উঠাবসা ওপেন ক্রিসেন্ট।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, সিন্ডিকেটের প্রধান নাসিরের নেতৃত্বে চোরা কারবারিরা প্রতিদিন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজ করে বাংলাদেশ – মিয়ানমার সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে শত শত গরু মহিষ অবৈধভাবে কুতু পালংয়ে এনে মজুদ করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন বাজার থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রশিদ সংগ্রহ করে পরবর্তীতে ডাম্পার ও মিনি ট্রাক যোগে মিয়ানমারের গরু মহিষ টেকনাফের শাপলাপুর সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করে আসছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে ১৫ বছরে সাবেক এমপি বদি পাচার করছে ৯ হাজার কোটি টাকা
মেঝ ভাই নামে খ্যাত মোহাম্মদ আলী হচ্ছে কুতু পালং বাজারের বিকাশের ডিলার। তার দোকানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা ট্রানজেকশন করে রোহিঙ্গারা। বিশেষ করে মাদককারবারী ও মিয়ানমারের গরু মহিষ চোরাচালানীরা সব সময় টাকা উত্তোলন করে তার দোকান থেকে। আর এই মেঝ ভাই মোহাম্মদ আলী হচ্ছে চোরা চালানের গডফাদার নাসিরের ছোট ভাই। কুতুপালং হতে সার, খাদ্য সামগ্রী, ভোজ্য তেল, মোবাইল পাচার করে মিয়ানমারে। পক্ষান্তরে বিনিময়ে মাদকসহ গরু মহিষ নিয়ে আসে। বলতে গেলে তার নিয়ন্ত্রণে অবৈধ ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে একসময় মোট অংকের টাকা বিনিময়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতার পরিচয় দিয়ে এসব অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যেত। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনে এই চোরা কারবারিরা খোলাস পাল্টিয়ে অবৈধ ব্যবসা ফের একক নিয়ন্ত্রণে নেন।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ইতিপূর্বে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব ১৫ এর অভিযানিক দলের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে বার্মিজ সিগারেটের বিশাল চালান সহ কালা চান্দের পুত্র চোরাকারবারী গডফাদার নাসির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। ওই সময় ১ হাজার ৪ শত ৪৬ কাটুন অবৈধ বার্মিজ সিগারেট জব্দ করে র্যাব। এ ব্যাপারে উখিয়া থানার তার বিরুদ্ধে চোরা চালান দমন নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে অনেকে জানিয়েছেন, জামিনে বের হয়ে কুতু পালং বাজারে অবৈধ ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে এই নাসির।
বাংলাদেশ – মিয়ানমার কেন্দ্রিক চোরাচালান ব্যবসার অন্যতম হোতাদের নজরদারি সহ কালো টাকার আয়ের উৎস অনুসন্ধান করার জন্য জাতীয় গোয়েন্দা বাহিনীসহ এনবিআর, দুদুক সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিকট দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।
###
পাঠকের মতামত