উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
কোল্ড ড্রিঙ্ক বা কোমল পানীয় পান করা পৃথিবীর বহু দেশেই একটা স্ট্যাটাস সিম্বল হয়ে গেছে। আমাদের দেশও এ ফাঁপা প্রবণতার বাইরে নয়। কোনো উৎসবে-অনুষ্ঠানে তাই তথাকথিত কোমল পানীয় থাকবে না - এটা যেন আমরা ভাবতেই পারি না। কিন্তু আমরা কি জানি, এসব পানীয় নামেই কোমল, কাজে আদৌ কোমল নয়, বরং বিধ্বংসী। এর ক্ষতির মাত্রা এতোই বেশি যে, একে কোমল বলা তো পরের কথা, পানীয়ই বলা যায় না।
কোমল পানীয় নামের বিষ গেলার আগে তাই এর ক্ষতিকর দিকগুলো জেনে নিন আর সিদ্ধান্ত নিন, এসব অখাদ্য মুখে তুলবেন কি না।
রক্তচাপ বেড়ে যায়
ডায়েট সোডা এবং কোল্ড ড্রিঙ্কে সোডিয়াম খুব বেশি থাকে। তাই এসব পানীয় বেশি মাত্রায় খেলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা খুব বেড়ে যায়। ফলে ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কারণেই প্রেসারের রোগীদের কোল্ড ড্রিঙ্ক খেতে মানা করেন চিকিৎসকেরা।
দাঁতের ক্ষতি
ডায়েট সোডায় অ্যাসিডিক এলিমেন্ট খুব বেশি থাকে। তাই এ ধরনের পানীয় পানে দাঁতের ক্ষয় শুরু হয়। সেই সঙ্গে দাঁতের অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
ওজন বৃদ্ধি করে
তথাকথিত কোমল পানীয়তে ক্যালোরির মাত্রা খুব বেশি থাকে। ফলে কোল্ড ড্রিঙ্ক বা ডায়েট সোডা বেশি খেলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হজমক্ষমতা বিগড়ে যাওয়ার কারণে আরও নানা ধরনের রোগও হতে পারে।
কিডনির কর্মক্ষমতা কমে যায়
বেশি মাত্রায় কোল্ড ড্রিঙ্ক বা ডায়েট সোডা খেলে কিডনি ফাংশন ব্যাহত হয়। সেই সঙ্গে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। আসলে এই ধরনের পানীয়, ইউরিনে অ্যাসিড এবং খনিজের ভারসাম্যকে নষ্ট করে দেয়। যে কারণে কিডনি স্টোন হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়
প্রতিদিন কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে শরীরে কোলেস্টেরল অনেক বেড়ে যায়। ফলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়ে। শুধু তাই নয়, একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে কোল্ড ডিঙ্ক খাওয়ার সঙ্গে স্ট্রোকেরও একটা যোগ রয়েছে।
হার্টের রোগ হওয়ার আশঙ্কা
প্রতিদিন ২ ক্যান কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আর হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায় প্রায় ৫০ শতাংশ।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস হতে পারে
বেশ কিছু গবেষণা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছে যে কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে শুধু কোলেস্টেরল বা হার্টে অ্যাটাকের আশঙ্কাই বাড়ে না, সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আসলে কোল্ড ড্রিঙ্কে প্রচুর মাত্রায় আর্টিফিশিয়াল সুইটনার ব্যবহার করা হয়, যা নানা দিক থেকে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে।
শরীরের অস্বস্তি
কোল্ড ড্রিঙ্কের সঙ্গে অ্যালকোহল মিলিয়ে পান করলে শরীরের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। তাছাড়া ডায়েট সোডায় এসপার্থেম নামে একটি উপাদান থাকে, যা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক।
কোষের মারাত্মক ক্ষতি
ডায়েট সোডা এবং বেশিরভাগ কোল্ড ড্রিঙ্কেই সোডিয়াম বেঞ্জোএট নামে একটি উপাদান থাকে, যা কোষের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে।
শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়
আমাদের মধ্যে অনেকেরই তেষ্টার সময় প্রথম পছন্দ হয় কোল্ড ড্রিঙ্ক। এমন অভ্যাস কিন্তু একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ এই ধরনের পানীয়তে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা শরীরে প্রবেশ করামাত্র মস্তিষ্কের কাছে সিগনাল যায় যে, শরীরে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে একের পর এক নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।
হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা
কোল্ড ড্রিঙ্কের স্বাদ বাড়াতে তাতে ফসফরিক অ্যাসিড নামে একটি উপাদান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই উপাদানটির মাত্রা শরীরে বৃদ্ধি পেলে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমতে শুরু করে। আর ক্যালসিয়ামের সঙ্গে যেহেতু হাড়ের স্বাস্থ্যের সরাসরি যোগ রয়েছে, তাই এমনটা হলে স্বাভাবিকভাবেই হাড়ের ক্ষতি হতে শুরু করে।
তাই সিদ্ধান্ত নিন, এর পরও কি আপনি কোল্ড ড্রিঙ্ক নামের দূষিত পানীয় কি পান করেই যাবেন?