নিজস্ব প্রতিবেদক
উখিয়ায় আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস (১৫ অক্টোবর) উদযাপন করলো দেশের অন্যতম বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) কোস্ট ফাউন্ডেশন।
এ উপলক্ষ্যে শনিবার (১৬ অক্টোবর) উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নে কোস্ট ফাউন্ডেশনের মাল্টিপারপাস সেন্টারে ৩০জন কিশোরী এবং ২০ জন অভিভাবক নারীর অংশগ্রহণে গ্রামীণ নারী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা রীতা বালা দে।
তিনি বলেন, মা-বাবাকে ছেলেমেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ করতে হবে। জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসতে হবে, ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি বন্ধ করতে হবে। বাল্যবিবাহ বন্ধে কাজীদের ভূমিকা অপরিসীম। মেয়েদের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, সবার আগে শিক্ষিত হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, মায়েরা চাইলে সমাজে ভুমিকা রাখতে পারেন, কুসংস্কার দুর করতে পারেন।
জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার (৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড) আনোয়ারা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- নিদানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হেলাল উদ্দিন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপরে প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন কোস্ট ফাউন্ডেশন এর রিজিওনাল জেন্ডার ফোকাল তাহরিমা আফরোজ টুম্পা।
সভায় জানানো হয়, করোনা মহামারীতে উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গিয়েছে বাল্যবিবাহ। দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। সম্প্রতি কোস্ট ফাউন্ডেশন কর্তৃক কক্সবাজার অঞ্চলে এক গবেষনায় দেখা গেছে কক্সবাজারের বাল্যবিয়ের গড় হার ৫৩%, যেখানে সারা দেশে এই হার ৫১.৪% এবং উখিয়ায় বাল্যবিয়ের হার সবচেয়ে বেশি।
গ্রামীণ নারীর অবদানকে স্বীকৃতিদান ও তাদের অধিকার সবার সামনে তুলে ধরতে বিশ্বের প্রায় সকল দেশে ১৫ অক্টোবর আর্ন্তজাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালিত হয়। নারীদের মধ্যে গ্রামীণ নারীরা সবচেয়ে অবহেলিত।
১৯৯৮ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালিত আসছে। জাতিসংঘ ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ পরিষদের সভায় ১৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালনের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়।
সভার সভাপতি আনোয়ারা বেগম বলেন, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। আমরা জানি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, অর্থনীতি, রাজনীতি-সকল সমস্যা মোকাবেলায় পুরুষের সাথে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে নারী। এই সমাজ নারী ছাড়া কল্পনা করা যায় না। সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নারী এবং নারীদেরকেই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে হবে আগে, সচেতন হতে হবে, শিক্ষিত হতে হবে, নিজের অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ শিক্ষা ছাড়া নারীদের এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব।
ফারজানা জযনব বিথীর সঞ্চালনায়।অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- কোস্ট ফাউন্ডেশনের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির সদস্য ও সফল উদ্যোক্তা ইয়াছমিন আকতার, কোস্ট মাল্টিপারপাস সেন্টারের কিশোরী আতিকা সুলতানা, সাদেকা আকতার, সৈয়দা মরিয়ম, রেডিও সৈকতের কোঅর্ডিনেটর গুলফার আরা হুরী এবং উখিয়া রিলিফ অপারেশন সেন্টারের টিম লিডার মোঃ রেজাউল করিম।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে ৫ জন নারীকে কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ সম্মাননা স্মারক (সার্টিফিকেট) প্রদান করা হয়।