আসছে ঈদ। বেশিরভাগ নারীই এ উপলক্ষ্যে মেহেদীতে রাঙ্গাবেন হাত। কিন্তু ইদানিং বিভিন্ন ধরণের, বিভিন্ন মানের মেহেদী পাওয়া যায়। এর সবই নিরীহ নয়। দ্রুত রঙ হবে বা অনেকদিন রঙ থাকবে এমন চটকদার কথা দিয়ে বাজারজাত করা কিছু মেহেদী আছে যা আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ানোর পরিবর্তে ত্বকের স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। কী করে বুঝবেন কোনটি ভালো মেহেদী আর কোনটি ক্ষতিকর?
সবচাইতে নিরাপদ মেহেদী হলো প্রাকৃতিক মেহেদী যার মূল উপাদান মেহেদী পাতা। এই মেহেদী ব্যবহারে ত্বকে রঙ হয় কমলা, লাল অথবা বাদামি। এটা চুলে ব্যবহারের জন্যই নিরাপদ। হাজার বছর ধরে তা ত্বকে ব্যবহার হয়ে আসছে। আর সুস্থ ত্বকে সেটা কোনো সমস্যাও তৈরি করে না। তবে কিছু কিছু মানুষে “ন্যাপথোকুইনোন সেনসিটিভিটি” নামের একটি অ্যালার্জির কারণে সাধারণ মেহেদীতেও হাতে চুলকানি হতে পারে।
ক্ষতিকর মেহেদী কোনটি? সাধারণত “ব্ল্যাক হেনা” যাকে বলা হয়, তা প্রাকৃতিক নয় এবং কখনোই পুরোপুরি নিরাপদ নয়। এতে সাধারণত PPD অথবা প্যারাফেনিলিনডাইঅ্যামিন নামের একটি ডাই থাকে। তা একটি রাসায়নিক টার ডাই, আর তা বিভিন্ন মানুষের ত্বকে ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। ত্বকে চুলকানি হওয়া থেকে শুরু করে যন্ত্রণাদায়ক ফোসকা পোড়া, এমনকি ক্ষত থেকে স্থায়ী দাগ পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে এর কারণে।
আপনি কী করে বুঝবেন আপনি যে মেহেদীটি ব্যবহার করছেন তা এমন ক্ষতিকর উপাদানে তৈরি? PPD হলো কুচকুচে কালো একটি উপাদান। আপনার মেহেদী যদি এক-দুই ঘন্টার মাঝেই কালচে হয়ে যায়, আর এক-দুই সপ্তাহের মাঝে তার রঙ ধুয়ে যায়, তবে তাতে PPD থাকতে পারে। এই মেহেদীতে কী আছে, তা যদি আপনি স্পষ্ট না জানেন, তবে তা না কেনাই ভালো।
ব্ল্যাক হেনা তৈরিতে শুধু যে PPD ব্যবহার হয় তা নয়। আরো কয়েক ধরণের ডাই ব্যবহার করা হয়, কিন্তু তারা PPD এর মতো এত দ্রুত কালো হয় না।
মেহেদীতে PPD আছে কিনা তা স্কিন টেস্ট করে দেখলেও লাভ হয় না। কারণ কারো কারো ক্ষেত্রে ব্যবহারের তিন সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া সুপ্ত থাকতে পারে, কারো কারো ক্ষেত্রে আবার সেকেন্ডের মাঝে ফোসকা পড়তে পারে ত্বকে।
রঙিন মেহেদী, অর্থাৎ কমলা, লাল বা বাদামি ছাড়া অন্য কোনো রঙের মেহেদী আদতে মেহেদীই নয়। নীল, হলুদ, সবুজ, বেগুনি, কালো বা সাদা রঙের যেসব মেহেদী পাওয়া যায়, এগুলো আসলে বিভিন্ন ধরণের ডাই। এসব ডাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।
টি ট্রি অয়েল, ইউক্যালিপটাস অয়েল এমন কিছু তেল মেহেদীতে ব্যবহার করা হতে পারে যাতে তা প্রয়োগ করা সহজ হয় এবং রং গাড় হয়। বেশিরভাগই নিরীহ। তবে কিছু কিছু এসেনশিয়াল অয়েল চুলকানি তৈরি করতে পারে, যেমন সাইট্রাস অয়েল। আপনি যদি মিনারেল অয়েলের গন্ধ পান (যেমন গ্যাসোলিন, কেরোসিন) তবে অবশ্যই এগুলো ব্যবহার করবেন না। কর্পুরের গন্ধ পেলেও একই কথা প্রযোজ্য।
সুত্র: হেনা পেজ