
রোহিঙ্গাদের ওপর ‘জেনোসাইড’ (গণহত্যা) চালানো সামরিক বাহিনীই এখন মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতায়। ওই বাহিনী এখনো সেখানে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারের তথাকথিত তদন্ত কমিশন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কোনো অপরাধ খুঁজে পায় না। তাই রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার পেতে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতই (আইসিজে) একমাত্র ভরসা।
গতকাল বুধবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে আইসিজেতে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায়’ গাম্বিয়ার পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন। এর আগে গত সোমবার মিয়ানমারের আইনজীবীরা গাম্বিয়ার মামলা করার এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ গাম্বিয়াকে টাকা দিচ্ছে এবং ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) হয়ে গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করছে—এমন অভিযোগ তোলেন তাঁরা।
গাম্বিয়ার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর্ব ছিল গতকাল। শুনানির শুরুতে গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী এবং মামলায় গাম্বিয়ার পক্ষের এজেন্ট দাওদা অ্যা জালো বলেন, কোন প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ছাড়তে বাধ্য হয়েছে, তা ভুলে গেলে চলবে না। মিয়ানমার বাহিনী ধর্ষণকে রোহিঙ্গাদের ওপর ধারাবাহিক গণহত্যার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছে, বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে, হত্যা-নির্যাতন চালিয়েছে। মিয়ানমারে এখনো গণহত্যা চলছে।
গাম্বিয়ার মন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারে বিচার পাওয়া অসম্ভব। এই আদালতই কেবল মিয়ানমারের বিচার করতে পারেন।’
গাম্বিয়ার পক্ষের আইনজীবী ফোলি হগের পল রেইখলার বলেন, আইসিজের অন্তর্বর্তী আদেশের পর রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নতুন করে ‘নির্মূল অভিযান’ চালানো হয়নি। রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে হত্যাযজ্ঞ কিংবা যৌন বা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ঘটেনি।
পল রেইখলার বলেন, মিয়ানমারের পক্ষের আইনজীবীরা গত সোমবার আদালতের সামনে বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে তাদের পরিচয় যাচাই-বাছাই চলছে। অথচ দুই মাস আগে গত ১৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি বৈষম্য এখনো চলছে। তাদের ফেরার মতো নিরাপদ, টেকসই পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয়নি।আদালত আগামী শুক্রবার আবার বসবে। সেদিন মিয়ানমার আবারও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ পাবে। আগামী সোমবার রাতে গাম্বিয়া যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ পাবে। কালেরকন্ঠ
পাঠকের মতামত