নির্দিষ্ট পরিমাণ তৈলাক্ততা স্বাস্থ্যবান ত্বকের জন্য দরকারি। কারণ তা বলিরেখা মুছে তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে শুষ্কতাজনিত চামড়া খসা ও মুখের রঙের পরিবর্তন থেকে রক্ষা করে। কিন্তু গরমের দিনে বাড়তি তৈলাক্ত ত্বক অনেকের বিরক্তির কারণ। তৈলাক্ত ত্বকে খুব সহজে ধুলা আটকে যায়। অতিরিক্ত তেল মুখের পোরগুলোকে বন্ধ করে দেয়। এতে করে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে ব্রণ হওয়ার প্রকোপ বাড়ে। চুলে বাড়ে খুশকি। এতে বিড়ম্বনার মাত্রা বেড়ে যায়। মাথা ও মুখের তৈলাক্ত ত্বক নিয়ে আপনার দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করবে নিচের টিপসগুলো।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য যা করবেন :
তৈলাক্ত ত্বকে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। ত্বক সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। দিনে তিনবারের বেশি ফেসওয়াশ বা ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রসাধনী থেকে শুরু করে ফেসওয়াশ—সব হতে হবে তেলমুক্ত। তবে গরমে এ ধরনের ত্বকের যেসব সমস্যা হয় সঠিকভাবে পরিষ্কার করলে অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।
শশার রস তৈলাক্ততা দূর করতে খুবই কার্যকর। প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে শশার রস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার বা লাল আটা মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে প্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এটি মুখে ও গলায় ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।
লোমকূপ বড় দেখানোর সমস্যা হলে একটু বাড়তি যত্ন নিতে হবে। এ জন্য ডিমের সাদা অংশ মুখে লাগিয়ে এরপর টিস্যু পেপার চেপে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ধীরে ধীরে টিস্যু পেপার তুলে পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে ফেলুন। ত্বকে টানটান ভাব চলে আসবে।
দুই চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে পরিমাণমতো গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট করে সারা মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। অথবা এক চামচ চন্দন গুঁড়োর সঙ্গে এক চামচ মুলতানি মাটি এবং পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে ১০-১৫ মিনিট রেখে শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন।
গোলাপ জল, লেবুর রস সমান পরিমাণে নিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে আধ ঘণ্টা মুখে লাগিয়ে রাখুন। আলতোভাবে তুলো দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন ধীরে ধীরে। এতে ব্রণ এবং ফুসকুড়ির দাগ উধাও হয়ে যাবে।
একটি পাত্রে পানি গরম করে তাতে চা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। তারপর মুখ গামছা দিয়ে ঢেকে গরম ভাব নিন মুখে ৩ মিনিট।
চুলের জন্য যা করবেন :
তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের মাথার ত্বকও তেলতেলে হয়। ময়লা জমে বেশি আর চুলের ময়লা থেকে খুশকির প্রবণতা বেড়ে যায়। নিয়মিত যাদের বাইরে বের হতে হয়, তারা প্রতিদিন মাইল্ড শ্যাম্পু অল্প ব্যবহার করতে পারেন। তা না হলে সপ্তাহে অন্তত তিনদিন ভালোভাবে শ্যাম্পু করা উচিত।
অনেক সময় তৈলাক্ত ত্বকের চুলেও রুক্ষতা দেখা দেয়। তখন কন্ডিশনার দিতে পারেন। অন্য সময় এটি ব্যবহার করার দরকার নেই। এ সময়ে যাদের চুল তৈলাক্ত ধরনের তাদের চুল খুব দ্রুতই ময়লা হয়ে যায়।
সপ্তাহে এক দিন নারিকেল তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ভালোভাবে চুলে মালিশ করুন। এরপর তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে চেপে নিয়ে সেটি মাথায় ১০ মিনিট পেঁচিয়ে রাখুন। এতে চুলের গোড়া মজবুত থাকবে। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
চা পাতার মধ্যে এক ধরনের কষ জাতীয় পদার্থ আছে যা চুল থেকে অতিরিক্ত তেল দূর করতে সাহায্য করে। একটা টি-ব্যাগকে কিছুক্ষণ কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন অথবা চুলায় চা জ্বাল দিয়েও নিতে পারেন। এবার এটাকে মাথার তালুতে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। কিছুক্ষণ পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
বেকিং সোডা চুলের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সাহায্য করে। দুই টেবিল চামচ বেকিং সোডা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ রেখে চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
ভিনেগার ব্যবহারেও চুলের তৈলাক্ততা কমে যায়। ৩ টেবিল চামুচ ভিনেগার এক কাপ পানিতে মিশিয়ে স্প্রে বোতলে ভরে সম্পূর্ণ চুলে স্প্রে করুন। ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এতে চুলের তৈলাক্ত ভাব কমার সাথে সাথে চুল উজ্জ্বল হবে।
পাঠকের মতামত