গর্ভাবস্থা একটি আশ্চর্য সময়! এসময় প্রত্যেকটি মা’র অনুভূতি থাকে ভিন্ন। গর্ভবতী মায়েরা গর্ভকালীন সময়গুলোতে একটু বেশি খাদ্য গ্রহণের চাহিদা অনুভব করে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা থাকেন খাদ্য বিমুখ। তাই গর্ভাবস্থার খাদ্য নির্বাচনে একটু ভাবার জায়গা রয়েছে।
ডিম খেতে হবে: গর্ভাবস্থা আর ডিম; এই দুটি জিনিসের অবস্থান বিপরীতমুখী। মর্নিং সিকনেস, সবসময় বমি ভাব ইত্যাদির কারণে এসময় ডিম এড়িয়ে যেতে চান অনেকেই। ডিম সাধারণত লো-ক্যালরি, উচ্চ মাত্রার প্রোটিন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদানের উৎস। তবে গর্ভাবস্থায় এটি DHA নামক Omega-3 ফ্যাটি এসিড সরবরাহ করে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। গর্ভাবস্থায় মায়ের অনাগত শিশুর মস্তিষ্ক ও চোখের গঠনে ডিম যথেষ্ট অবদান রাখে।
দুগ্ধজাত খাদ্য: গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়াম থাকা জরুরি। দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য থেকে প্রচুর ক্যালসিয়াম পাওয়া সম্ভব। এছাড়া, দুগ্ধজাত খাবারে উপস্থিত ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ এবং প্রোটিন নবজাতকের শারীরিক বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
গাজর: গর্ভাবস্থায় মায়েদের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন এ থাকা জরুরি। এটি নবজাতকের ত্বক, চোখ, দাঁত এবং হাড়ের সঠিক গঠনে সাহায্য করে। গাজরে উপস্থিত ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আপনাকে রক্ষা করে।
আম: পটাশিয়াম, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি-তে ভরপুর আম গর্ভাবস্থায় মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও রক্তচাপ ঠিক রাখে। এছাড়াও এসময় মায়েদের পরিপাকতন্ত্র স্বাভাবিক রাখতে এবং মর্নিং সিকনেস কমাতে আম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পপকর্ন: অবাক করা হলেও সত্যি যে, পপকর্ন গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবদান রাখে। পপকর্নে প্রচুর লবণ ও মাখন থাকে। এতে উপস্থিত খাদ্য আঁশ, ভিটামিন ই, সেলেনিয়াম এবং কিছু অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান অনাগত শিশুর কোষ প্রাচীর গঠনে সহায়তা করে।
বাদাম: গর্ভাবস্থায় কিছুক্ষণ পর পর ভাজা পোড়া খাওয়ার প্রবণতা থাকে। ক্ষতিকর ভাজা পোড়া না খেয়ে গর্ভবতী মায়েরা বাদাম খেতে পারেন। বাদামে উপস্থিত মিনারেল, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, কপার, সেলেনিয়াম এবং জিংক গর্ভবতী মা এবং অনাগত শিশুর মিনারেলের মাত্রা ঠিক রাখে, সেই সাথে Omega-3 এর ফ্যাট শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে সহায়তা করে।
পালং শাক: পালং শাকে গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারী মোটামুটি সব ধরনের পুষ্টিগুণ বিদ্যমান; ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, খাদ্য আঁশ, আয়রন, ফলিক এসিড এবং উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ইত্যাদি শিশুকে পরবর্তীতে বিভিন্ন মারাত্মক রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। গর্ভাবস্থায় আয়রন গ্রহণ খুব-এ জরুরী, কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে গর্ভবতী মা’দের অ্যানিমিয়ায় ভুগতে দেখা যায়। আর পালং শাকে উপস্থিত আয়রন গর্ভবতী মাকে অ্যানিমিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।