সরওয়ার আলম শাহীন,উখিয়া নিউজ ডটকম::
উখিয়া টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ঘিরে জঙ্গি তৎপরতার কথা নতুন নয়। শুধুমাত্র ক্যাম্প ভিত্তিক জঙ্গিদের নিরাপদ রাখতে জঙ্গি সালাউল ইসলাম ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের বিপুল পরিমান আর্থিক সাহায্য দিয়ে যাচ্ছিল। বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিক্তিক জঙ্গি তৎপরতা চললেও তা ছিল গোপনে।এ জঙ্গি তৎপরতা ও এর অর্থের যোগানদাতা হিসেবে বারবার মিডিয়ায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের আরএসওর সামরিক প্রধান জঙ্গি সালাউল ইসলামের নাম এলেও কক্সবাজারের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে একাধিক বার পার পেয়ে গেছেন তিনি। কিন্ত এবার আর রক্ষা হলোনা। টেকনাফের শাপলাপুরে একটি বাড়ীতে গোপন বৈঠক চলাকালে বহুল আলোচিত ব্যক্তি হাফেজ সালাউল ইসলামকে এক সৌদি নাগরিকসহ ৪ জনকে আটক করেছে বিজিবি।আটক অপর তিনজন হচ্ছে- সৌদি নাগরিক আবু সালেহ আল গাদ্দানি, আর.এস.ও নেতা মাওলানা ইব্রাহিম ও টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আ.লীগ নেতা জাফর আহমদের বেয়াই মৌলভি ছৈয়দ করিম। শনিবার (৩০ জুলাই) বিকালে মৌলভী ছৈয়দ করিমের বাসায় গোপন বৈঠক থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
জঙ্গি নেতা সালাউল ইসলামের গ্রেফতারের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে তার সহযোগী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক জঙ্গিরা গ্রেফতার আতংকে আত্বগোপনে চলে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে।বর্তমানে আতংকিত এসব জঙ্গিরা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে রয়েছে বলে ক্যাম্পে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। এসব জঙ্গিদের মধ্যে সালাউল ইসলামে কাছের জন হিসেবে যারা পরিচিত তাদের মধ্যে রয়েছে মৌলভী কাদের,পিতা মৃত হোসেন আলী, সাং বালুখালী,উখিয়া মৌলভী জাফর আলম, পিতা হাসিম আলী, উখিয়া।মৌলভী জাফর আলমের ভাই বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থানরত, তার নাম মোহাম্মদ গফুর। কুতুপালংয়ের প্রভাবশালী স্থানীয় কতিপয় আওয়ামীলীগ নেতার ছত্রছায়ায় সালাউলের ঘনিষ্ট সহযোগী ক্যাম্পে অবস্থানরত জঙ্গিদের মধ্যে রয়েছেন মৌলভী আবুল মনজুর, পিতা মোঃ সুলতান, সাং কুতুপালং ,অনরেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘোনা,মৌলভী জানি আলম,পিতা মৃত মৌলভী আবুল হোসেন, সাং কুতুপালং রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প ব্লক অ/৩,হাফেজ দিদার ইসলাম,পিতা মৃত মোঃ আবু শরিফ,সাং কুতুপালং রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প ব্লক অ/৪,মৌলভী হামিদ হোসেন,পিতা সুলতান সাং কুতুপালং রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প প্রমুখ। ক্যাম্পের একাধিক রোহিঙ্গা জানান, জঙ্গি সালাউলের গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পের জঙ্গিরা আতংকিত অবস্থায় রয়েছে। তাদের ধারনা জঙ্গি সালাউল ইসলামকে রিমান্ডে নেওয়া হতে পারে। আর রিমান্ডে তাদের নাম চলে আসতে পারে, এই ভেবে এসব জঙ্গি আত্বগোপনে চলে যাচ্ছে বলে ক্যাম্পে অবস্থানকারী রোহিঙ্গারা জানান। এদিকে বিজিবি টেকনাফস্থ ২ নং ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ জানান, শাপলাপুরে অবস্থিত অবৈধ রোহিঙ্গা বস্তিতে নগদ টাকা এবং ত্রাণ বিতরণের খবর পেয়ে টেকনাফ উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা অভিযানে যায়। সেখান থেকে আটক করা হয় সৌদি নাগরিক আবু সালেহ আল গাদ্দানী, রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন আরএসওর নেতা হাফেজ হাফেজ সালাউল ইসলাম, মৌলভী ছৈয়দ করিম ও মৌলভী ইব্রাহিমকে। তাদেরকে টেকনাফ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।