বিভিন্ন রাজ্যে বিদ্রোহীদের আক্রমণে ক্রমাগত চাপের মুখে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। বিদ্রোহীদের কাছে উত্তর-পশ্চিমের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে মিন অং হ্লাইংয়ের জান্তা বাহিনী। পশ্চিম সীমান্তে আরাকান আর্মির (এএ) হামলায় পিছু হটছে তারা। এরই মধ্যে একে একে সেখানকার সব সামরিক ঘাঁটি চলে যাচ্ছে আরাকান আর্মির দখলে।
বেসরকারি সংবাদ পরিষেবা সংস্থা রেডিও ফ্রি এশিয়া বলছে, রোববার বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমার বর্ডার গার্ড ফোর্সের আরও একটি ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায় আরাকান আর্মি। মিয়ানমারের পশ্চিম সীমান্তের এই ঘাঁটিতে পূর্ণ সামরিক শক্তি নিয়ে চালানো হয় এই হামলা।
হামলার পর পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে দৌঁড়ে পালায় বিজিপি সদস্যরা। এরই মধ্যে এভাবে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমারের ২২৯ জন বিজিপি। মঙ্গলবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ দপ্তর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে তাউং পিও লেত ইয়ারের ওই ঘাঁটি দখলে নেয় আরাকান আর্মি।
পালিয়ে এল আরও ৮ বিজিপি, সীমান্তে আতঙ্ক পালিয়ে এল আরও ৮ বিজিপি, সীমান্তে আতঙ্ক
ক্রমেই জান্তা বাহিনীর ওপর চড়াও হচ্ছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীরা। তিনদিনে জান্তা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অনেক সামরিক ঘাঁটি দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। আর এ লড়াইয়ে নিহত হয়েছে ৬২ জান্তা সেনা। পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফস) ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর আক্রমণে দিশেহারা জান্তা সরকার।
তিনদিনে সাগাইং, মাগওয়ে ও মান্দালয় অঞ্চল ও কাচিন ও কারেন রাজ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংবাদমাধ্যম ইরাবতী বলছে, অনেক চেষ্টার পরও পিডিএফ বাহিনীর হাত থেকে সাগাইং শহর পুনর্দখলে নিতে পারেনি জান্তা বাহিনী।
এর মধ্যেই সোনার খনির এলাকা হিসেবে পরিচিত হোমালিনের সেউই পি আয়ে শহর নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালায় জান্তা। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সেই অভিযান বন্ধ করে দেয়।
এর আগে টানা লড়াইয়ের পর গত বছরের নভেম্বরে এই শহর চলে যায় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (পিডিএফএস) হাতে। সংবাদমাধ্যম ইরাবতী বলছে, ৪০০ জান্তা সেনা এই শহর পুনরুদ্ধারের অভিযান চালায়। গত শনিবার তারা ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। নিহত হয় অনেকে।
বিজিপি প্রবেশ থামছেই না, পালিয়ে এল ২২৯ জনবিজিপি প্রবেশ থামছেই না, পালিয়ে এল ২২৯ জন
বিদ্রোহীদের দমাতে না পেরে এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো শুরু করেছে জান্তা বাহিনী। সোমবার কারেনি রাজ্যের ডেমোসো শহরতলীর একটি স্কুলে বোমা হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ৪ শিশু নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ১০ জন।