কক্সবাজার সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ ক্রমশঃ শক্তিসঞ্চয় করে উপকূলের দিকে এগুচ্ছে। ইতোমধ্যে আবহাওয়া বিভাগ কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও মংলাসহ দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরকে ৪নং স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এতে কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকায় ও বিভিন্ন দ্বীপে বসবাসকারী বাসিন্দাদের মাঝে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ২৫ বছর আগে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার প্রায় দেড় লাখ মানুষ মারা যায়।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক জানান- ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার দুপুর বারটায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজার শহরসহ জেলায় মাঝারী আকারের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কক্সবাজার আবহাওয়া বিভাগ বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখাকালে কক্সবাজার জেলাজুড়ে হালকা থেকে মাঝারি আকারের বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। বৃষ্টিপাত আরো বাড়তে পারে বলে জানান সহকারী আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক।
তিনি আরো জানান, ঘূর্ণিঝড়ের আশংকায় দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে, যাতে তারা স্বল্প সময়ের নির্দেশে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসতে পারে। কক্সবাজার সংলগ্ন গভীর সাগরে মৎস্য আহরণে যাওয়া ফিশিংবোটগুলো বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ফিরে আসছে বলে জানান কক্সবাজার জেলা ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ।
পাঠকের মতামত