বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। আরও ঘনীভূত হয়ে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ভোরে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ইতোমধ্যে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে, আজ সোমবার রাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সন্ধ্যা থেকে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ৩ বিমানবন্দর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। আবহাওয়ার পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিমানবন্দর।
বেবিচক সূত্র জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে দেশের বিমানবন্দরের এপ্রোন এলাকার হালকা যন্ত্রপাতি সরিয়ে রাখা হচ্ছে। এয়ারলাইনগুলোকেও তাদের যন্ত্রপাতি নিরপদ স্থানে রাখতে বলা হয়েছে। যাতে ঝড়ে কোনও যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
এদিকে দেশি এয়ারলাইনগুলো ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি নিয়েছে। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়েছে নভোএয়ার। বিকাল থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ফ্লাইট বাতিল করেছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, সাগর আরও বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরগুলোকেও ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আবহাওয়ার পরিস্থিতি বিবেচনায় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিমানবন্দর সন্ধ্যা থেকে বন্ধ রাখা হবে। বিমানবন্দরগুলোতে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার ভোরে বা সকাল নাগাদ পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার পাশ দিয়ে দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোও ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এদিকে এখনও দেশে প্রধান বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক আছে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আবহাওয়ার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ফ্লাইট চলাচল করছে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ফ্লাইট চলছে স্বাভাবিক ভাবে। আবহাওয়ার বিভাগের সাথে সমন্বয় করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদীবন্দরগুলোকে ৩ (তিন) নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ৩ (তিন) নম্বর নৌ-বিপদ সংকেতের অর্থ হচ্ছে বন্দর এলাকা ঝড়ে কবলিত। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ একটানা ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিবেগের একটি সামুদ্রিক ঝড় সহসাই বন্দর এলাকায় আঘাত হানতে পারে। সকল প্রকার নৌ-যানকে অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে।