উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
চকরিয়া থানা কম্পাউন্ডেই শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যে ওই ঘটনার ভিডিও ও স্থির ছবি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। শিশু নির্যাতনকারী ব্যক্তি চকরিয়া থানার দারোগার সিএনজি চালক বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। তার নাম ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভিকটিমের পরিচয় মেলেনি। তবে ঘটনাটি কয়েকমাস পূর্বের বলে দাবি করছেন থানা পুলিশ সদস্যরা।
সংগৃহীত ভিডিওতে দেখা গেছে, ফুলহাতা সাদাশার্ট পরিহিত মুখে দাঁড়িওয়ালা মধ্য বয়সী লোকটি আনুমানিক ১০ বছর বয়সী শিশুর দুই হাতে রশি দিয়ে বেঁধে ব্যাপক মারধর করছে। বেপরোয়া লাথি ও কিলঘুষিতে শিশুটি মাটিতে লুটে পড়ে গেলেও মারধর থামেনি। নির্যাতন থেকে বাঁচতে আর্তচিৎকার ও আকুতিতেও মন গলেনি ওই পাষানের। কিছুক্ষণ পর পর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছে, মারধর করছে। যেন সে মানুষরূপী নব্য জানুয়ার।
নির্যাতনের শিকার শিশুর পরিচয় পাওয়া যায়নি। হাফপ্যান্ট ও হাফহাতা গেঞ্জি পরিহিত শিশুটির পায়ে ভিন্ন জোড়ের দুইটি সেন্ডেল দেখা গেছে। মারধর করাকালে সে শুধুই জবাব দিয়েছে, বাসে করে হ্নীলা থেকে এসেছে। প্রশ্নকারীকে এরচেয়ে বেশী কিছু জানাতে পারেনি। পোষাক-পরিচ্ছদ ও ভাষায় অনেকে রোহিঙ্গা শিশু বলে ধারণা করছে।
চকরিয়া থানা সেন্টার এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যক্তি শিশু নির্যাতনকারী ব্যক্তি থানার দারোগার সিএনজি চালক বলে জানিয়েছে। তবে নাম ঠিকানা জানাতে পরেনি। নির্যাতনকারীর পরিচয় অনুসন্ধান চলছে।
ঘটনার বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস ফোরাম কক্সবাজার এর সদস্যসচিব মিজানুর রহমান বাহাদুর জানান, শিশু নির্যাতনের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তদন্তপূর্বক দোষি ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে, দোষি ব্যক্তিরা পার পেয়ে যাবে।
জাতীয়পার্টির নেতা, মানবাধিকার ও সমাজমর্কী মোঃ নাজিম উদ্দিন বলেন, থানা হচ্ছে একজন মানুষের নিরাপদ স্থান। অপরাধি হলেও একজন মানুষকে এভাবে মারধর করতে পারেনা। কিন্তু শিশুকে যেভাকে মারধর করা হয়েছে, তা খুবই অমানবিক। নির্যাতনকারী ব্যক্তিকে অবিলম্বে আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে শিশু নির্যাতনের ভিডিও পেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিপাকে পড়েন চকরিয়া থানা পুলিশ। তারা দ্রুত নির্যাতনকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তবে পরিচয় গোপন রেখেছে থানা কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, ঘটনাটি প্রায় এক মাস আগের। মারধরকারী ব্যক্তিটি মাঝেমধ্যে সিএনজি নিয়ে আসতো। ভাড়ায় যেতো। তবে সে থানার কোন স্থায়ী চালক নয় বলে দাবি করেছেন ওসি বখতিয়ার।
তিনি জানান, নির্যাতনকারীকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তার পরিচয় আমার মনে নেই।