চট্টগ্রাম: দেড় যুগ আগে এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে হত্যার দায়ে দুই পেশাদার ছিনতাইকারী মো.সাইফুল ওরফে শহীদ এবং মো.শহীদুল্লাহ ওরফে শহীদকে রশিতে ঝুলিয়ে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) রাত ১২টা ১ মিনিটে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চে দু’জনকে পাশাপাশি কাষ্ঠে একসঙ্গে ফাঁসি কার্যকর করে পাঁচ জল্লাদ।
কারা সূত্র জানায়, ১২টার আগে জল্লাদ আবদুল হান্নানের নেতৃত্বে জল্লাদ নাছির, সিরাজ, ইদ্রিছ ও কায়সার যমটুপি পরিয়ে দুই আসামিকে ধারাবাহিকভাবে হাত ধরে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যায়। মঞ্চে তোলার পর তাদের গলায় ফাঁসির দড়ি পরানো হয়। জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের সংকেত পেয়ে কারা জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী তার হাতে থাকা রুমাল মাটিতে ফেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ জল্লাদ লিভার টেনে ফাঁসি কার্যকরে সহযোগিতা করেন।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০০৭ সালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে স্ত্রী হত্যার দায়ে দণ্ডিত এক আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছিল। এর দশ বছর পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এই দুজনের ফাঁসি কার্যকর হলো।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১৯ মে রাতে মিরসরাই উপজেলা সদর থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে তিনজন ফটিকছড়ি যায়। ফটিকছড়িতে একটি নির্জন স্থানে চালক আজিজকে খুন করে ফেলে রেখে তারা অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় উপ কারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) অসীম কান্ত পাল বাংলানিউজকে জানান, সিএনজি অটোরিকশা চালক নিখোঁজের ঘটনায় মিরসরাই থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। মামলা নম্বর ০৮ (০৫) ২০০৪। মরদেহ উদ্ধারের পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছিল।
২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ আব্দুর রহমান পাটোয়ারি তিন আসামিকে ফাঁসির দণ্ড দিয়েছিল। হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে সাজা বহাল থাকে। আপিল বিভাগে মীর হোসেন নামে একজনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয় বলে জানান অসীম কান্ত পাল।
আপিল বিভাগে ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকার পর সাইফুল ওরফে শহীদ এবং শহীদুল্লাহ ওরফে শহীদ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে ব্যর্থ হন। প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার নথি চট্টগ্রাম কারাগারে এসে পৌঁছানোর পর তাদের ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেয়া হয়।
ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা সাইফুল ওরফে শহীদ মিরসরাই উপজেলার উত্তর হাজীসরাই গ্রামের লেদু মিয়ার বাড়ির কামাল উদ্দিনের ছেলে। শহীদুল্লাহ ওরফে শহীদ একই উপজেলার মধ্যম সোনাপাড়া গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে।