বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার পরপরই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শতাধিক আসনে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এরমধ্যে চট্টগ্রামের তিনটি ও কক্সবাজারের দুইটি আসনে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছে দলটি। যদিও জামায়াত নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারিয়ে দলটি দলগতভাবে নির্বাচনের সুযোগ হারিয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আসনে জরিপ পরিচালনা করছে জামায়াত ইসলামী। জরিপের রিপোর্ট অনুযায়ী দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি দেশের বিভিন্ন আসনে প্রার্থী নির্বাচন করতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় আসন এবং প্রার্থীর নাম নির্বাচন করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মাঠে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে দলটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে আওয়ামী লীগের অধীনে নয় নির্দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নিতেই এই প্রস্তুতি।
বিএনপি জোট ছাড়ল জামায়াত
মনোনয়নের জন্য জামায়াতের পাঁচ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মাদ ইজ্জত উল্লাহ। এতে রয়েছেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আজাদ ও সাবেক শিবির সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত।
জামায়াতের ঘোষিত ১২০ আসনের প্রার্থী তালিকার মধ্যে চট্টগ্রাম ১০, ১৫ ও ১৬ এবং কক্সবাজার ২ ও ৪ আসন রয়েছে।
চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর-ডবলমুরিং) আসনে সাবেক এমপি মাওলানা শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনে সাবেক এমপি মাওলানা শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে মাওলানা জহিরুল ইসলাম, কক্সবাজার-২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) আসনে সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আজাদ, কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী।
এরআগে রবিবার (২৮ আগস্ট) নিজেদের সাংগঠনিক ভার্চুয়াল প্রগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন। ফলে প্রায় ২৪ বছরের রাজনৈতিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ৭৬টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল। ওই নির্বাচনে দলটি ১০টি আসনে বিজয়ী হয়। ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে জামায়াত। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে জামায়াত ১৮টি আসনে বিজয়ী হয়। এই নির্বাচনে দলটি ২২২ জন প্রার্থী দিয়েছিল।
১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ৩টি আসনে জয়ী হয়। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে জামায়াত ১৭টি আসন পায়। মহিলা আসনগুলো থেকে ৪টি আসনে জয়ী হয় তারা। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ২টি আসনে বিজয়ী হয়। ওই নির্বাচনে দলটি জোটগতভাবে ৩৯টি ও ৪টিতে এককভাবে নির্বাচন করে।