আল্লাহ চাইলে বান্দার জন্য চাকরিসহ যে কোনো অনুগ্রহ যে কোনো সময় দান করতে পারেন। জীবিকার তাগিদে চাকরি বা কাজের প্রয়োজনীয়তা মানুষের অনেক বেশি। ভালো চাকরির প্রত্যাশায় আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলে তিনি বান্দাকে নিরাশ করেন না। যেভাবে কাজ ও জীবিকা লাভ করেছিলেন হজরত মুসা আলাইহিস সালাম।
হজরত মুসা আলাইহিস সালামে অনুসরণ ও অনুকরণে কেউ যদি আল্লাহর কাছে চাকরি বা কাজের জন্য অনুগ্রহ কামনা করে, সাহায্য চায় তবে তিনি বান্দাকে তা দিতে পারেন। সুতরাং উত্তম জীবিকা লাভে চাকরি বা কাজের জন্য কুরআনে বর্ণিত দোয়ায় আবেদন করা যেতে পারে। তাহলো-
رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
উচ্চারণ : ‘রাব্বি ইন্নি লিমা আংযালতা ইলাইয়্যা মিন খাইরিং ফাক্বির। ’
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ নাজিল করবে, নিশ্চয় আমি তার মুখাপেক্ষী। ’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৪)
-
দোয়ার উৎস
হজরত মুসা আলাইহিস সালামের একটি আকুতি ও আল্লাহর কাছে আশ্রয় লাভ ও কাজ অনুসন্ধানের আহ্বান উঠে এসেছে এ দোয়ায়। কুরআনুল কারিমে ঘটনাটি এভাবে এসেছে-
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম যখন ফেরাউনের ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। তখন তার কোথাও যাওয়ার, আশ্রয়ের কিংবা জীবিকার কোনো সংস্থান ছিল না। ফেরাউনের ঘর থেকে বেরিয়ে সে সময় তিনি অনেক দূরে চলে গিয়েছিলেন। আল্লাহ বলেন-
‘যখন সে মাদইয়ানের কূপের কাছে পৌঁছল। সেখানে দেখল একদল লোক তাদের পশুগুলোকে পানি পান করাচ্ছে এবং তাদের পিছনে দু’জন নারী তাদের পশুগুলোকে আগলে আছে। মুসা আলাইহিস সালাম বললেন, তোমাদের কি হলো? (দাঁড়িয়ে আছ কেন?) ওরা (নারী) বলল, রাখালরা ওদের পশুগুলোকে নিয়ে সরে না গেলে আমরা আমাদের পশুগুলোকে পানি পান করাতে পারি না। আর আমাদের বাবা অতি বয়স্ক মানুষ। ’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৩)
পরের আয়াতেই মুসা আলাইহিস সালামের কাজ চেয়ে আল্লাহর মুখাপেক্ষী হওয়ার আবেদন এসেছে। আল্লাহ তাআলা মুসা আলাইহিস সালামের সে আহ্বান তথা দোয়া এভাবে তুলে ধরেন-
‘মুসা (আলাইহিস সালাম) তখন ওদের (দুই নারীর) পশুগুলোকে পানি পান করালো। তারপর সে ছায়ার নিচে আশ্রয় গ্রহণ করে বলল- ‘হে আমার প্রভু! তুমি আমার জন্য যে অনুগ্রহ নাজিল করবে, নিশ্চয় আমি তার মুখাপেক্ষী। ’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৪)
অর্থাৎ আমার জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ বা চাকরি দরকার। তুমি আমার জন্য যে কাজ বা জীবিকার ব্যবস্থা করবে। আমি তোমার ব্যবস্থা করা সে কাজের বা জীবিকার মুখাপেক্ষী।
পরে আয়াতে মুসা আলাইহিস সালামের প্রতি অনুগ্রহ নাজিলের সুসংবাদ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা তা উল্লেখ করেন এভাবে-
‘তখন (ওই) দুই নারীর একজন জড়োসড়ো পায়ে তার কাছে এসে বলল- আপনি যে আমাদের পশুগুলোকে পানি পান করিয়েছেন, তার পারিশ্রমিক দেয়ার জন্য আমার বাবা আপনাকে ডাকছেন। তারপর মুসা আলাইহিস সালাম তার কাছে এসে সব ঘটনা বর্ণনা করলেন। সে বলল, ‘ভয় করো না। তুমি জালিম সম্প্রদায়ের কবল থেকে বেঁচে গেছ। ওদের (দুই নারীর) একজন বলল- হে আব্বা! আপনি একে মজুর হিসেবে নিযুক্ত করুন। কারণ আপনার মজুর হিসেবে নিশ্চয় সে (মুসা) উত্তম হবে, যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত। ’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৫-২৬)
আর এভাবেই হজরত মুসা আলাইহিস সালামের চাকরির অনুগ্রহ প্রার্থনার দোয়া কবুল হয়েছিল। সেখানে তার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল।
চাকরি কিংবা কাজ, কোনোটিই মহান আল্লাহর ইশারা ছাড়া হয় না। তাই আল্লাহর অনুগ্রহ লাভে চাকরির জন্য হজরত মুসা আলাইহিস সালামের সে আবেদন মুমিন মুসলমানের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উত্তম রিজিকের জন্য চাকরি বা কাজ পেতে উল্লেখিত দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ধরণা দেয়ার তাওফিক দান করুন। বেকারদের উত্তম চাকরি বা কাজের তাওফিক দিন। আমিন।