ঢাকা: সরকারি-বেসরকারি যেকোনো ধরনের চাকরি পেতে হলে উত্তীর্ণ হতে হবে ডোপ টেস্টে। শুধু তাই নয়, যেকোনো ধরনের যানবাহন চালানোর জন্য লাইসেন্স পেতে হলেও ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্তি না থাকার প্রমাণ দিতে হবে। আগামী বছরের প্রথম দিন থেকেই এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)।
সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অতিরিক্ত পরিচালক সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, শরীরে মাদকের উপস্থিতি শনাক্তকরণের এই ডোপ টেস্টে উত্তীর্ণ না হতে পারলে চাকরি, লাইসেন্স— কোনোটাই মিলবে না। দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজেও শিক্ষার্থীদের আচমকা এই পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে।
ডিএনসির ওই কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ব্যাংক-বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরতদের ডোপ টেস্ট করার জন্য পর্যায়ক্রমে নির্দেশনা দেওয়া হবে। আর লাইসেন্স প্রার্থীরা ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলে তাদের যেন লাইসেন্সের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়, সে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ)। একইসঙ্গে দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হঠাৎ হাজির হয়ে শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হবে।
বেশ কিছুদিন হলো মাদকের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে রয়েছে সরকার। দেশ থেকে মাদক নির্মূল করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরও একই নীতি নিয়েছে। যেকোনো ক্ষেত্রে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল এই সরকারি সংস্থাটি। তবে ‘সফটলাইনে’ নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্যও কিছু কর্মসূচি পালন করবে তারা। এরই অংশ হিসেবে সারাদেশে একইসঙ্গে ‘এক মিনিট দাঁড়িয়ে মাদককে না বলা’র কর্মসূচি পালিত হবে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতিও চলছে।
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একজন পরিচালক সারাবাংলাকে বলেন, সেপ্টেম্বর মাসেই এক মিনিট দাঁড়িয়ে না বলবে দেশ। মাদককে নিরুৎসাহিত করতেই এই আয়োজন করা হয়েছে। তবে ঠিক কত তারিখে এটি করা হবে, তা বলতে রাজি হননি ওই কর্মকর্তা।
জানা গেছে, এ মাসের ২৭ সেপ্টেম্বর এই কর্মসূচি পালনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত ছিল। তবে ওই দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মসূচি থাকায় সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই এটি পালন করা হতে পারে। তবে এখনও এই কর্মসূচির সিদ্ধান্তে সচিব সই করেননি এবং স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এখনও কোনো বৈঠক হয়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম শিকদার সোমবার বিকেলে সারাবাংলাকে বলেন, ‘এক মিনিট দাঁড়িয়ে মাদককে না বলবে দেশ’— এমন একটি বড় প্রচারাভিযান হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে এটি কোন দিন পালিত হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঢাকার কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করছে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। অন্যদিকে, সারাদেশে কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারাও কাজ করছেন।
পাঠকের মতামত