সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় এখন ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার আপ রুকাইয়া জাহান চমক। এবার অভিযোগ উঠেছে তিনিও বিবাহিত! বলা হচ্ছে, ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে চমকের বিয়ে হয়। তার স্বামীর নাম খান এইচ কবির। তবে চমক বলেছেন, যে ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে বলা হচ্ছে, তিনি তার প্রেমিক।
বিডিনিউজের খবরে বলা হয়, বিয়ের তথ্য গোপনের জন্য জান্নাতুল নাঈম এভ্রিলের খেতাব বাতিল করে মঙ্গলবার ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ মুকুট পরানো হয় প্রতিযোগিতার প্রথম রানার আপ জেসিয়া ইসলামকে। প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েছেন দ্বিতীয় রানার জান্নাতুল সুমাইয়া হিমিও। সেই সুবাদে প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার আপ হন চমক। এরপরেই ফেসবুকে চলে আসে চমকের বিয়ের প্রসঙ্গটিও। এতে আবারও সামনে এসেছে আয়োজনটির স্বচ্ছতার প্রসঙ্গ। তবে চমক বলেছেন, মঙ্গলবার প্রেস কনফারেন্সের দিন আমি বয়ফ্রেন্ডকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারাই ভেরিফাই করেছে, আমাদের বিয়ে হয়নি। বলা হচ্ছে, বিবাহিত বলেই আমাকে যৌথভাবে দ্বিতীয় রানার আপ করা হয়েছে, এটিও ভুল তথ্য।
কিন্তু একটি স্ক্রিনশটে দেখা গেছে, কবির নামে সেই তরুণ ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছিলেন, আপনি তার স্ত্রী। এ প্রশ্নে চমক বলেন, হ্যাঁ, ওটা অনেক আগে পোস্ট করা। পোস্টটি করার কারণটা বলছি, তখন বেশ কিছু ছেলে খুব বিরক্ত করত আমাকে। ওরা যাতে আমাকে বিরক্ত না করে সেকারণেই ওই পোস্টটি দিয়েছিল। এটা জানানোর জন্য যে, আমার স্বামী আছে, কেউ যেন বিরক্ত না করে। আসলে এখনও আমরা বিয়ে করিনি। পড়াশোনা শেষ করে বিয়ের কমিটমেন্ট করেছিলাম আমরা। অনেকে ফেইসবুকে ফেক নিউজটি ছড়াচ্ছে। আমার সঙ্গে কথা না বলেই অনেকে নিউজটি করছে। এটা কাম্য নয়। এমনকি বিষয়টি নিয়ে আয়োজকদের যে বক্তব্য প্রচার হচ্ছে, সেটিরও কোনো ভিত্তি নেই।
এক আসরে তিনজন নম্বর ওয়ান : মুকুট পেয়ে হারানোর মতো ঘটনা বিশ্বে অনেক হলেও বাংলাদেশের জন্য প্রথম। একই সাথে বিরল ঘটনা ঘটলো এই আসরে। মিস ওয়ার্ল্ডসহ বিভিন্ন সুন্দরী প্রতিযোগিতায় মুকুট পেয়ে পরবর্তী সময়ে নানা কারণে মুকুট হারাতে হয়েছে অনেক সুন্দরীকে। মুকুট পেয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার তালিকায় রয়েছেন, লিওনা গেজ (মিস আমেরিকা–১৯৫৭), মারজোরি ওয়ালেস (মিস ওয়ার্ল্ড–১৯৭৩), গাব্রিয়েলা ব্রাম (মিস ওয়ার্ল্ড–১৯৮০), ভেনেসা উইলিয়ামস (মিস আমেরিকা–১৯৮৪), অক্সানা ফেদেরোভা (মিস ইউনিভার্স–২০০২), ক্যারি প্রিজিন (মিস আমেরিকা–২০০৯), ইতির এসেন (মিস তার্কি–২০১৭) ও সোয়ে ইয়েন সি (মিস গ্র্যান্ড মিয়ানমার–২০১৭)।
বাংলানিউজের খবরে বলা হয়, চমকপ্রদ তথ্য হলো– এক আসরে তিনজনকে মুকুট পরানোর ঘটনা ঘটলো এই প্রথম। এর আগে কোনো সুন্দরী প্রতিযোগিতায় এমনটি ঘটেনি। এক আসরে তিনজন নাম্বার ওয়ান হয়নি কখনও। এদিক থেকে বাংলাদেশ প্রথম কিনা, গবেষকরা এটা ভালো বলতে পারবেন।
২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারের (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে বসে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’–এর চূড়ান্ত আসর। কিন্তু বিভ্রাট ঘটে যায় বিজয়ীর নাম ঘোষণায়। প্রথমে জানানো হয় সেরার মুকুট পরছেন জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। এরপরই দুঃখপ্রকাশ করে জানানো হয় বিজয়ী হয়েছেন জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল।
প্রথম রানার হিসেবে জেসিয়া ইসলামের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর দ্বিতীয় রানার আপের নাম ঘোষণা না করেই ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ হিসেবে হিমির নাম ঘোষণা করা হয়। চারদিকে হাততালি শুরু হলে আয়োজক প্রতিষ্ঠান অন্তর শোবিজের কর্ণধার স্বপন চৌধুরী জানান, ফলাফল ঘোষণায় ভুল হয়েছে। তিনি বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নের নাম ভুল হয়েছে, আমাদের হাতে একটা রেজাল্ট শিট পরে এসেছে।’ এরপর তিনি জান্নাতুল নাঈমের নাম চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করেন। তবে মজার ব্যাপার হলো– দুই মিনিটের জন্য হলেও সেরার স্বাদ গ্রহণ করতে পেরেছেন হিমি।
এদিকে, বিজয়ী হয়েও মুকুট হারাতে হয়েছে প্রথম ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ জান্নাতুল নাঈম এভ্রিলকে। তথ্য গোপন করার কারণে তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় মুকুট। অন্যদিকে, শেষ হাসি হাসলেন জেসিয়া ইসলাম। শেষ পর্যন্ত ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ খেতাব জুটেছে তার কপালে। তথ্য গোপন করে সমালোচনার মুখে পড়ে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’–এর মুকুট হারিয়েছেন এভ্রিল। গত বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে নতুন বিজয়ী হিসেবে প্রথম রানার আপ জেসিয়ার নাম ঘোষণা করেন বিচারকেরা।