নিউজ ডেস্ক::
চট্টগ্রামে জঙ্গিবিরোধী কমিটিতে ‘নব্য আওয়ামী লীগাররা’ যাতে জায়গা না পায় তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক হতে বলেছেন জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ‘জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি’ গঠন নিয়ে বৈঠকে জঙ্গি সন্দেহে কেউ গ্রেপ্তার হলে তাকে ছাড়াতে তদবিরে নিষেধ করেছেন তিনি।জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে রোববার সিসিসির ১০টি ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।“নব্য আওয়ামী লীগার’ যেন কমিটিতে স্থান না পায়। এরাই সবচেয়ে বেশি ঝামেলা করে। আপনাদের দেওয়া কমিটি যেন আমাদের কাটছাঁট করতে না হয়।এসময় বৈঠকে উপস্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতাদের দিকে ইঙ্গিত করে জেলা প্রশাসক বলেন, “অনেক সময় আসামি ধরা যায় না আপনাদের কারণে। অনেকের ব্যাপারে তদবির করেন। দয়া করে জঙ্গিদের ব্যাপারে কোনো তদবির করবেন না।”মেজবাহ উদ্দিন বলেন, জেলা প্রশাসক সম্মেলনে বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গিবিরোধী কমিটি গঠন করে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে।এর আগে ২০১৩ সালে নাশকতা প্রতিরোধেও এধরনের কমিটি গঠন হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এটি সরকারের পক্ষ থেকে মেনে নেওয়া হয়নি। সরকার পূর্ণাঙ্গ কমিটি চাইছে।বিভিন্ন উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক। নগরীতে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কমিটি গঠন করে সাত দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা বলেন তিনি।এসব কমিটিতে ‘বিতর্কিত’ লোককে না রাখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পক্ষের লোকদের নিয়ে এ কমিটি গঠন করতে হবে।কমিটিতে স্থানীয় মহল্লা সর্দার, মসজিদের ইমামদেরও রাখার পরামর্শ দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর নিয়ে তা জমা দিতে হবে।
ওয়ার্ড ও জনসংখ্যা ভেদে কমিটিগুলোর আকার ৪১ থেকে ১০১ সদস্যর মধ্যেও রাখার আহ্বান জানান তিনি।
মেজবাহ বলেন, জমা দেওয়া কমিটির বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের মতামত নেওয়া হবে; পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন দিয়ে যাচাই-বাছাইও হবে।বৈঠকে সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক জাহিদ মাহমুদ বলেন, অনেকেই আছেন বিভিন্ন কমিটির সদস্য হয়ে এলাকা থেকে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টায় থাকেন।জঙ্গিবাদবিরোধী কমিটি ‘আলঙ্করিক’ না করে ‘কার্যকরি’ভাবে গঠনের অনুরোধ জানান তিনি।রাজনৈতিক কারণে কাউকে যেন জঙ্গি হিসেবে শনাক্ত করা না হয় সে বিষয়টি খেয়াল রাখার অনুরোধ জানান ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোবারক আলী।বৈঠকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে অভিযোগ উঠলে জেলা প্রশাসক তা সরাসরি তাকে জানানোর কথা বলেন।
মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “আমরা বাংলাদেশ স্টাডিজ নামে একটা কুলের সন্ধান পেয়েছি। স্কুলের পাঠ্যসূচিতে শেখ মুজিবর রহমানের নামের আগে কোথাও ‘বঙ্গবন্ধু’ লেখা নেই।সেখানে বিভিন্ন ভাবে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে পরিচিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।” স্কুলটি নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।প্যানেল মেয়র নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, জোবাইদা নার্গিস, পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ, চান্দগাঁও থানার ওসি সৈয়দ আবু মোহাম্মদ শাহজাহান কবির, বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন, পাহাড়তলী থানার ওসি রণজিত বড়ুয়া, ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ড কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন খান ও ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা বৈঠকে বক্তব্য রাখেন।
সুত্র- বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম