কক্সবাজার সদরের জালালাবাদের খামারপাড়া গ্রামের জাফরের দোকানের সামনে গতকাল ২১ জুন মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৬ টা’র দিকে দু’সন্ত্রাসী গ্রুপের পাল্টাপাল্টি হামলায় দু’চিহ্নিত সন্ত্রাসী গুরুতর আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, ওই ইউনিয়নের পূর্ব মিয়াজী পাড়া গ্রামের মৃত ছৈয়দ আলমের পুত্র ফোরকান আহমদ (৪০) এবং অপরজন হলেন খামার পাড়া গ্রামের জাফর আলমের পুত্র মনছুর আলম (৩২)। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। উভয়জনের অবস্থা সংকাটাপন্ন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। উভয়ের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ডাকাতি, ছিনতাই, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা, মাদকব্যবসাসহ দেড় ডজনাধিক নিয়মিত মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শীরা ভয়ে কেউ সহজে মুখ খুলতে চাইছেনা । জানা যায়, মাস দুয়েক পূর্বে মনছুর স্থানীয় এক নারীকে উত্যক্ত করার চেষ্টাকালে ফোরকান তার দলবল নিয়ে মনছুরকে বাধা দেয় এবং মনছুরকে ফোরকান তার বাসায় ধরে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এ ঘটনার জের ধরে গতকালের এ ঘটনা ঘটে বলে সূত্রগুলো জানায়। বিবরণে প্রকাশ, ঘটনাস্থলে একটি ইফতার মাহফিল চলছিল। ফোরকান এসময় ওই স্থান অতিক্রমকালে মনছুর ও তার সহযোগীরা দেখে ফেলে। মনছুরের নেতৃত্বে তার ভাই আনিছুর রহমান, পেনোয়ার, মিজান ও মিনার তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলের সন্নিকটে তাদের বাসায় গিয়ে কিরিচ ও বন্দুক নিয়ে বোরকা পরিহিত অবস্থায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং ফোরকানের গতিরোধ করে ধারলো দা দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে ফোরকান তার কোমরে থাকা ছুরি দিয়ে মনছুরকেও ছুরিকাঘাত করে। এসময় আশপাশের লোকজন জড়ো হতে থাকলে মনছুর ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়। ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছে। অপরদিকে ঘটনা চলাকালীন উভয়েই গুরুতর আহত হলে ফোরকানকে প্রথমে ঈদগাঁও’র একটি ক্লিনিকে পরে সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে স্থানান্তর করা হয়। মনছুর কোথায় চিকিৎসাধীন সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। ঘটনার পরপরই জালালাবাদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ ও ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের একদল পুলিশ এবং ওয়ার্ড মেম্বার ফরিদুল আলম ও নবনির্বাচিত মেম্বার ওসমান সরওয়ার ডিপো ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। উল্লেখ্য, এই দুই সন্ত্রাসীর ব্যাপারে এলাকার মানুষ সর্বদা তটস্থ। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়না। তাদের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে এলাকাবাসী প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে তদন্ত কেন্দ্রের আইসি মিনহাজ মাহমুদ ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান।