কক্সবাজারে ভয়াবহ বন্যায় যোগাযোগ, কৃষি, শিক্ষা, পর্যটন ও মৎস্য খাতে প্রায় ৬২২ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে। তবে অনেকের ধারণা-চকরিয়া-পেকুয়ার অধিকাংশ মৎস্য ঘের, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হিসাব করলে তা হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, বন্যা-পরবর্তী সময়ে জেলার ৬০টি ইউনিয়নে পর্যবেক্ষণ শেষে ৬২১ কোটি ৯১ লাখ ৭৭ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। বন্যায় ১ লাখ ২ হাজার ৬০৮টি পরিবারের ৫ লাখ ১৩ হাজার ৪০ সদস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় বন্যার পানিতে ডুবে এবং পাহাড়ধসের ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) কাছে পাঠানো জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ও ত্রাণ শাখার দেওয়া তথ্যমতে, ৭ আগস্ট টানা বর্ষণ শুরু হলে কয়েকটি উপজেলায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। একই সঙ্গে পাহাড়ি ঢলের পানিতে নিুাঞ্চল প্লাবিত হয়। বিশেষ করে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় প্রায় সব ইউনিয়ন পানির নিচে তলিয়ে যায়। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং বিভিন্ন উপসড়কের যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুসারে, বন্যায় জেলায় ৫০৬ দশমিক ২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়। এতে ৩ হাজার ১৮০টি ঘর, ১২ হাজার ২৩৯ দশমিক ৫ হেক্টর ফসলি জমি, ২২টি কালভার্ট, ২৬টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ১২ হাজার ৬২৩টি নলকূপ এবং ২৮ হাজার ৯৩৬টি লেট্রিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া পানিতে ৪২টি ছাগল, ৩২টি গরু, একটি মহিষ, ১ হাজার ১১৬টি হাঁস এবং ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯১০টি মুরগি মারা যায়। ২৪ দশমিক ৯৮ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ৪৯ দশমিক ২৯ কিলোমিটার আধা-পাকা সড়ক এবং ১২৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, ৭৭ দশমিক শূন্য ৫ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন, ৪৮টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ৯ দশমিক ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ও ১৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া পুকুর, দিঘি, খামার ও চিংড়ি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে ১৫টি।
পাঠকের মতামত