সরওয়ার আলম শাহীন,উখিয়া নিউজ ডটকম::
উখিয়া উপজেলার আনাচে কানাচে হাত বাড়ালেই ইয়াবা পাওয়া যাচ্ছে।সর্বত্র ইয়াবার আগ্রাসন।উপজেলার শীর্ষ ইয়াবা ব্যাবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে বখতিয়ার আহামদ। সম্প্রতি ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ৫০ হাজার ইয়াবা নিয়ে আটক হওয়া বখতিয়ার এক সময় বালুখালী সীমান্তে বার্মিজ আচারের ব্যবসা করত বলে একাবাসী সুত্রে জানা গেছে।বার্মিজ আচার চোরাচালানের সময় বখতিয়ার বেশ কযেকবার গ্রেফতারও হয়েছিল আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে।কিন্তু পরে জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় চোরাচালানী কাজে জড়িয়ে পড়ে সে।এক সময় জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা পাচারের বাহক হিসেবে।সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে পুলিশের ত্রুসফায়ারে নিহত নুর মোহাম্মদের বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে বখতিয়ার জড়িয়ে পড়ে পুরোপুরি ইয়াবা বানিজ্যে। হয়ে উঠে উখিয়া উপজেলার অন্যতম শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী। টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা গডফাদার নুর মোহাম্মদ পুলিশের ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর বখতিয়ার সহ উখিয়ার কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদের ইয়াবা বানিজ্যের হাত ধরে।তাদের মধ্যে অন্যতম বখতিয়ার।লোকমুখে শোনা যায়,নিহত নুর মোহাম্মদের ইয়াবা বিত্রিুর বিপুল পরিমান টাকা গচ্ছিত ছিল বখতিয়ারের কাছে। এ নিয়ে নিহত নুর মোহাম্মদের স্ত্রী খুরশিদা বেগমের সাথে বখতিয়ারের বেশ কযেকবার বাড়াবাড়ির ঘটনাও ঘটেছে।কিন্ত গচ্ছিত বিপুল পরিমান টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।মুলত এখান থেকে বখতিয়ারের উত্তান।সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ইয়াবা বানিজ্য করে অল্পদিনের ব্যাপক পরিচিত লাভ করে বখতিয়ার। স্থানীয় প্রশাসন,রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে প্রভাবশালীদের সাথে গড়ে তুলে সখ্য। তাদের ছত্রছাঁয়ায় ইয়াবা বানিজ্য করে কোটিপতির খাতায় নাম লেখায় সে।নগদ টাকা ছাড়াও মাইক্রো, ডাম্পার, ট্রাক, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের কয়েকটি স্পেশাল সার্ভিস রয়েছে বলে জানা গেছে তার।এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন,ক্লাব ও সংস্থা সমুহে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে এলাকায় সমাজসেবক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে।গত ইউপি নির্বাচনে বিপুল পরিমান টাকা খরচ করে পালংখালী ইউনিয়ন থেকে সদস্যও নির্বাচিত হয় বখতিযার।কিন্ত ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরও ইয়াবা ব্যবসা ছাড়তে পারেনি সে। ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার ২ দিন পর রাজধানী ঢাকায় ৫০ হাজার ইয়াবা নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় সে।এর আগেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মামলা ছিল বখতিযারের বিরুদ্ধে। উখিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে ইয়াবা গডফাদার’ বখতিয়ারের বিরুদ্ধে গত ৬ মার্চ ২০১৫ ইং তারিখে বালুখালী সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা পাচার করার সময় দায়িত্বরত বিজিবির উপর হামলা, গুলি বর্ষণ ও রোহিঙ্গাদের ছিনিয়ে নেওয়া সংক্রান্ত জিআর ৭০/১৫ নং মামলা দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে দাখিল করা হয়। এছাড়াও বখতিয়ারের বিরুদ্ধে বাঘেরহাট জেলার চিতলমারি থানায় ৪(১২)০৭, উখিয়া থানায় ১০(০৪)০৫, ০৫(০১)০৯, ১২(১১), ০৩(১২)০৮, ০৬(০৩)১৫ নম্বরসহ ডজন খানেক ইয়াবা, মাদক দ্রব্য ও মানবপাচার সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। কিন্ত বখতিয়ার গ্রেফতার হওয়ার পরও তার ইয়াবা বানিজ্য বন্ধ হয়নি।বখতিয়ারের অবর্তমানে তার ব্যবসার হাল ধরে রয়েছে তার দু, ভাই ও স্থানীয় এক ইউপি সদস্য,বালুখালীর এনামুল হক। এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে,এখনো তার গড়া সম্পদ অক্ষত রয়েছে। এখনো আগের মতোই চলছে ইয়াবা বানিজ্য।শুধুমাত্র ব্যাক্তি বদল হয়েছে।এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়েরের সাথে আলাপ করা হলে তিনি উখিয়া নিউজ ডটকমকে বলেন,মাদক ব্যবসার সাথে কোন ধরনের আপোষ নেই.মাদক ব্যবসায়ীরা সমাজের শত্রু,দেশের শত্রু।চিন্থিত মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
“উখিয়া উপজেলার সর্বত্র ভয়াবহ ইয়াবা আগ্রাসন চলছে।আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার মুখে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও এখানে তার উল্টোটাই হচ্ছে।দিন দিন এ ব্যবসার যুক্ত হচ্ছে নিত্যনতুন মুখ।উপজেলার আনাচে-কানাচে হাত বাড়ালেই ইয়াবা পাওয়ার সুবাধে বেকার যুবক,রাজনৈতিক কর্মী,স্কুল,কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে ঘরের গৃহিনীরাও ইয়াবা পাচারে যুক্ত হয়ে পড়েছে।অনেকটা আলাদিনের চেরাক পাওয়ার মত ইয়াবা বানিজ্য করে অল্প সময়ে বাড়ী গাড়ীসহ কোটিপতির খাতায় নাম লিখিয়েছে অনেকে।গড়ে তুলেছে আলিশান মার্কেটসহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্টান। উখিয়া উপজেলার শীর্ষ ইয়াবা গড়ফাদারদের নিয়ে উখিয়া নিউজ ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক সরওয়ার আলম শাহীনের ৫ পর্বের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পড়ুন।আজ পড়ুন ১ম পর্ব। জেলে গড়ফাদার বখতিয়ার থেমে নেই ব্যবসা।”
পাঠকের মতামত