কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ট রুহুল আমিন স্টেডিয়ামজুড়ে সুনশান নিরবতা। গ্যালারিতে নেই দর্শকদের উচ্ছ্বাস। চেয়ারগুলোতে জমেছে ধুলাবালি। সবুজের ঘাসে বাজে না বুট ও বলের ধ্বনি। পুরো মাঠ যেন ফ্যাকাসে। এখন মাঠের কার্যক্রম আর খেলা চলে ভাড়ায়। যে কেউ ভাড়া নিয়ে তাদের বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি পালন করছে। এর কারণে সুযোগ পাচ্ছেন না নিয়মিত খেলোয়াড়-কর্মকর্তা।
এ ছাড়া প্রতি বছর জেলার সর্বোচ্চ যে আয়োজন ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, সেটিও এবার হচ্ছে না। যার কারণে পেশা পরিবর্তন করছেন খেলোয়াড়রা।
বরাবরই অভিযোগ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি না থাকায় এমন বেহাল অবস্থা ক্রীড়াঙ্গনের। ইনডোরে কারাতে ও আউটডোরে চলছে ঘামঝরা প্র্যাকটিস। এতেই সবকিছু সীমাবদ্ধ। মাঠে টুর্নামেন্ট না থাকায় খেলোয়াড়দের মাঝে নেই প্রাণচাঞ্চল্য। এতে হতাশ খেলোয়াড় ও ক্রীড়ামোদিরা।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সবশেষ ক্রীড়া সংস্থার চার বছর মেয়াদী কমিটি হয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ভেঙে দেওয়া হয় জেলা-উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সব কমিটি। এরপর মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে ৭ সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি গঠনের পরিপত্র জারি করা হয়।
কিন্তু দীর্ঘ চার মাস পার হলেও কক্সবাজার জেলা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি হয়নি। অথচ ১৫ অক্টোবরের মধ্যে জেলা-উপজেলা কমিটি গঠন করার জন্য পুনরায় চিঠি ইস্যু করে মন্ত্রনালয়। সেই চিঠিও অবজ্ঞা করে আসছে। ফলে ঝিমিয়ে পড়েছে জেলার ক্রীড়াঙ্গন। দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
কক্সবাজার সদর উপজেলা সোনালি অতীত ফুটবল ক্লাবের সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘মাঠে খেলোয়াড় আছে, কিন্তু টুর্নামেন্ট নেই। ৯০ দশকে বছরে ২০-৩০ টি টুর্নামেন্ট থাকতো। কিন্তু এখন বছরে এক-দুটি টুর্নামেন্টও চোখে পড়ে না। নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন না থাকায় মেধা বিকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার সম্ভাবনাময় কিশোর-তরুণরা। যার কারণে ক্রীড়াঙ্গন অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। কমিটি করে মাঠ সরব না রাখলে ভালো খেলোয়াড় তৈরি হবে না।’
বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি এমআর মাহবুব বলেন, আগের কমিটি ভেঙে দেওয়ার পর সব এলোমেলো হয়ে গেছে। নেই কোনো লীগ বা টুর্নামেন্ট।
তিনি আশা করেন, দ্রুত কমিটি দিয়ে জেলার সবখানে ক্রীড়াঙ্গন সরব রাখা হোক। নতুন এডহক কমিটিতে যেন প্রকৃত ক্রীড়াবান্ধব মানুষদের রাখা হয়, সে দাবিও জানান তিনি।
জেলা ক্রীড়া অফিসার মাঈন উদ্দিন মিলকী বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারী ছোট ছোট কিছু আয়োজন হচ্ছে। জেলা ক্রীড়া অফিসের উদ্যোগে নিয়মিত ক্রীড়ার ইভেন্ট করা হচ্ছে। জেলা-উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি গঠনে প্রক্রিয়া চলছে।’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, ‘যাচাই-বাছাই করে দ্রুত কমিটি ঘোষণা করা হবে। প্রকৃত যারা ক্রীড়া চর্চা করে তাদের নিয়ে কাজ করা হবে। এতে করে সচল হবে ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম।
পাঠকের মতামত