নিউজ ডেস্ক: রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় সোমবার শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ১১ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৩৭ জন। ঝড়ে গাছ চাপা ও বিলবোর্ড ভেঙে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। মস্কোর জরুরি সেবা বিভাগের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা তাস এ খবর জানিয়েছে।
তাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ে আহত হওয়া এমন অন্তত ১৩৭ জনকে মস্কোর বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। নিহত ব্যক্তিরা মস্কোর বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসী। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশই ঝড়ের সময় রাস্তায় ছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ে গাছপালা উপড়ে আর বিলবোর্ড ভেঙে পথচারী কিংবা চলন্ত গাড়ির ওপর পড়লে ১১ জনের মৃত্যু হয়।
রাশিয়ার জরুরি সহায়তা মন্ত্রণালয় জানায়, ঝড়ে মস্কোসহ রাশিয়ার মধ্য-অঞ্চলের অন্তত ২০টি জনবসতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক হাজারেরও বেশি গাছপালা উপড়ে পড়েছে। অন্তত ৩০টি বাড়ির অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া মস্কো উপশহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি উল্টে পড়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
স্মরণকালের ভয়াবহ এ ঝড়ে মস্কোতে উপড়ে পড়েছে অনেক গাছপালা। মস্কোর একাডেমিচেস্কায়া, প্রফেসাইয়ুজনায়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে গতকাল বিকেল পর্যন্ত এসব গাছ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ফুটপাথ ও সংলগ্ন রাস্তায় গাছের অসংখ্য ডাল স্তুপ করে রাখা। অবশ্য বিকেল থেকেই মস্কো নগর কর্তৃপক্ষ গাছ সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে। প্রায় ৩৫ হাজার পরিচ্ছন্ন কর্মী এ কাজে যুক্ত হয়েছেন।
মস্কোর আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রামান ভিলফান্দ গণমাধ্যমকে জানান, ঝড়ের সময় বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। ঠান্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে উষ্ণ বায়ুমন্ডলীর সংযোগের কারণে এ ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়।
মস্কোর জরুরি বিভাগ জানায়, সোমবার দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে হঠাৎ আকাশ কালো করে দমকা বাতাস বইতে শুরু করে। এরপর প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা ঝড়ের সময় মস্কো ও আশপাশের অঞ্চলে বজ্রপাতসহ মুষলধারে বৃষ্টি হয়।
সোমবারের মস্কোর প্রকৃতির এমন তা-বলীলার ছবি ও ভিডিও অনেককেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে দেখা গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে এক মিলিয়ন রুবল করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মস্কোর মেয়র সের্গেই সাবইয়ানিন।
মস্কোর মাস্কোবস্কী কমসোমোলেছ পত্রিকা জানায়, গত এক দশকেও মস্কোবাসী এমন ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় দেখেননি। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে মস্কোয় আঘাত হানা এক ঘূর্ণিঝড়ে ৯ জনের প্রাণহানি ঘটে।
পাঠকের মতামত