গ্রামীণ ঐতিহ্যকে বুকে ধারণ করে এবার টমটমে চড়ে বিয়ে করেছেন এক যুবক। সৌদি আবর প্রবাসী ওই যুবক শুধু টমটমে চড়ে বিয়েই করেননি, নববধূকে নিয়ে ঘুরেছেন সাত গ্রাম। বরের এমন কাণ্ডে হৈচৈ পড়ে গেছে এলাকায়।এমনই ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনীর ভাটপাড়া গ্রামে। বর ওই এলাকার আলী হোসেনের ছেলে মিঠুন।
জানা গেছে, বাবার ইচ্ছে ছিল ছেলেকে টমটমে চড়ে বিয়ে দেবেন। তার সেই ইচ্ছে অনুযায়ী মঙ্গলবার ছেলেকে টমটমে চড়িয়ে নেওয়া হয় মেহেরপুর সদরের কালীগাংনী গ্রামে। ওই গ্রামের আবু বক্করের মেয়ে পিংকির সঙ্গে বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে ঘোরানো হয় সাতটি গ্রাম।
টমটমে বর ও নববধূকে দেখতে ভিড় জমেছিল রাস্তার দুই পাশে। রাজা-রানীর বেশে দুজনকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন পথচারী ও এলাকাবাসী।
প্রতিক্রিয়ায় বর মিঠুন বলেন, লোকজ ঐতিহ্য ও বাবার ইচ্ছে অনুযায়ী টমটমে চড়ে বিয়ে করেছি। বিয়েতে টমটম গাড়ির ব্যবহার অনেককেই মুগ্ধ করেছে। গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে যুবসমাজকে টমটমে বিয়ের আহ্বান জানান তিনি।
বরের বাবা আলী হোসেন বলেন, আমার তিনটি সন্তান প্রতিবন্ধী। সবার ছোট ছেলে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শখ করে টমটমে চড়ে বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই। সে অনুযায়ী বিয়ের আয়োজন করা হয়।
কনের বাবা আবু বক্কর বলেন, যান্ত্রিকতার এই যুগে বিয়ের পর মেয়েকে টমটমে চড়ে সাত গ্রাম ঘোরানো হয়েছে। বিষয়টি আমার অনেক ভালো লেগেছে।
টমটমচালক রবিউল ইসলাম বলেন, এলাকায় টমটম গাড়ি একেবারেই বিলুপ্তির পথে। আমিও মালয়েশিয়া প্রবাসী ছিলাম। এক বছর হলো বাড়ি ফিরেছি। নতুন কিছু করার ভাবনা আসে মাথায়। তাই অনেক টাকা খরচ করে টমটমের গাড়ি কিনেছি। এলাকায় বিয়েতে টমটমের অনেক চাহিদা রয়েছে। একটি টমটম হওয়ায় সকলের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভাবছি আরও একটি টমটম কিনব।
গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রমজান আলী বলেন, আজকাল যান্ত্রিকতার যুগে আগেকার রাজা বাদশাহরা যে টমটম গাড়ি চড়ে সওয়ার করতেন, তা আর নেই। দু-একটি চোখে পড়ে। অনেকেই শখ করে ঘুরতে বের হয়। তবে সৌদি প্রবাসী মিঠুনের উদ্যোগ পুরাতন ঐতিহ্য মানুষকে নতুন করে জানান দিয়েছে। নব দম্পতিকে শুভকামনা জানিয়েছেন তিনি।
পাঠকের মতামত