‘অপরাধী’ গানের কভার গেয়েছিলেন টুম্পা। আর এই গানেই গোতা বাংলাদেশ চিনে ফেলল তাঁকে। এক কভার গান তাঁকে রাতারাতি খ্যাতি এনে দিল। অপরাধী’ টুম্পার অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে। মুন্সীগঞ্জ ছেড়ে মিরপুরে বাসা নিয়েছেন। নিত্যনতুন কাজের প্রস্তাব পাচ্ছেন। কালের কণ্ঠের ‘রঙের মেলা’য় টুম্পার বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে ফিচার করেছেটুম্পার অন্য জীবন শিরোনামে। অনলাইন পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো লেখাটি-
২০১৪ সাল থেকে অন্যদের গান গেয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করতেন টুম্পা খান সুমি। গান শুনতে ভালোবাসেন। শোনার সময় গানের তালে গিটার বাজান। তাল-লয়-সুর মিলে গেলে সেই গানই রেকর্ড করেন। ভিডিওর জন্য একটি ক্যামেরাও আছে তাঁর। বাসার সোফায় বসে ভিডিও করে ইউটিউবে আপলোড করেন। এভাবেই ধীরে ধীরে পরিচিতি পাওয়া শুরু। বাড়তে থাকে ফ্যান-ফলোয়ার। পড়াশোনা ও গান নিয়ে ধীরেসুস্থেই এগোচ্ছিলেন। এ বছর বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ থেকে অর্থনীতি বিষয়ে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন। হাতে বেশ খানিকটা সময়। পরীক্ষার ব্যস্ততার কারণে দুই মাস নতুন গান আপলোড করতে পারেননি। ফ্যান-ফলোয়াররা তাগাদা দিচ্ছিল। এই সময় আরমান আলিফের ‘অপরাধী’ শুনতে পান টুম্পা। শোনার সময় নিজেই গানটির সুরে গিটার বাজাচ্ছিলেন। দেখলেন বেশ ভালো হচ্ছে। টুম্পা বলেন, ‘সুরটা তোলার পর মনে হলো আমি এটার ফিমেল ভার্সন করে গাইব। এ জন্য মাইয়ার জায়গায় পোলা শব্দটি বসিয়ে দিই। এরপর আমার অন্য গানের মতো ভিডিও করে ইউটিউবে আপলোড করি।’
এই গানটিই যে তাঁর জীবন বদলে দেবে তা ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করেননি টুম্পা। ভেবেছিলেন অন্য সব গান যেমন ভিউ পেত, এটাও সে রকমই পাবে। দুই, তিন কিংবা বড়জোর পাঁচ লাখ। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই গানটির ভিউ ৫০ লাখ ছাড়িয়ে যায়। শোবিজের পাশাপাশি সাধারণ শ্রোতারাও প্রচুর শেয়ার করতে শুরু করে। দুই সপ্তাহের মধ্যেই সবার মুখে মুখে টুম্পা খানের নাম।
বলেন, ‘অনেক গুণী মানুষদের কাছ থেকে শুভেচ্ছা পেয়েছি। তাঁরা অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, সাহস দিয়েছেন। গানটির মূল গায়ক আরমান আলিফও আমার গাওয়াটি শেয়ার করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আমার গায়কীর প্রশংসা করেছেন। আমার সঙ্গে একটি দ্বৈত গান করার কথাও বলেছেন।’ এই গানের পর টুম্পাকে ডেকে পাঠান গীতিকার কবির বকুল। তাঁর কথায় ‘ও মাই লাভ’ চলচ্চিত্রের একটি গানে প্লেব্যাক করেন টুম্পা। গানটিতে টুম্পার সহশিল্পী কিশোর। টুম্পা বলেন, ‘এটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। এভাবে প্লেব্যাকের সুযোগ পাব কখনো ভাবিনি। এর পুরো কৃতিত্ব শ্রোতাদের, যারা আমার গান ভাইরাল করেছেন।’ ফরহাদের সুরে ‘অষ্টপ্রহর’ শিরোনামে আরেকটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। তালিকায় আছে নাম ঠিক না হওয়া আরেকটি গান। টুম্পা বলেন, “‘শিরোনামহীন’, ‘চিরকুট’, ‘শূন্য’সহ অনেক জনপ্রিয় ব্যান্ডের গান কভার করেছি। প্রায় প্রতিটি গানই কোনো না কোনোভাবে মূল গায়কের কাছে গেছে। তাঁরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে উত্সাহ দিয়েছেন। ইমন চৌধুরীর ‘প্রাণ ধরিয়া মারো টান’ কভার করেছিলাম। শুনে তিনি বলেছিলেন—‘এই গানটা আজ থেকে তোমার। শুধু তাই নয়, একটি প্রতিযোগিতার জন্য তিনি গানটি নতুন করে কম্পোজিশন করে দিয়েছেন।” ‘অপরাধী’ টুম্পার অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে। মুন্সীগঞ্জ ছেড়ে মিরপুরে বাসা নিয়েছেন। নিত্যনতুন কাজের প্রস্তাব পাচ্ছেন।