ধারাবাহিক অপহরণের ঘটনায় চরম আতঙ্কে রয়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া, হোয়াইক্যং ও হ্নীলা ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এমন পরিস্থিতিতে টেকনাফের পাহাড়ে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযানের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে টেকনাফের সন্তান কবি ও সাংবাদিক নুপা আলমের উদ্যোগে কক্সবাজারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সংহতি জানান বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনীতিবিদসহ অনেকে।
নুপা আলম বলেন, ‘কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া, হোয়াইক্যং ও হ্নীলা ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা। টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার কিছু এলাকায়ও পাহাড় রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় কতিপয় দুর্বৃ্ত্তের নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এসব পাহাড়ে অবস্থান নেয়। যারা ধারাবাহিকভাবে সাধারণ মানুষ ও রোহিঙ্গাদের অপহরণ করে জিম্মি করে নির্মম নির্যাতন পরবর্তীতে মুক্তিপণ আদায়, এমনকি হত্যার ঘটনা সংঘটিত করছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু গত এক বছরেই টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৯২ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন। যাদের বেশিভাগকে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরতে হয়েছে। ফলে এই ৪টি ইউনিয়নের মানুষ এখন চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আতংকে রয়েছেন।’
বিভিন্ন তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিক নুপা আলম বলেন, ‘এই দুর্গম পাহাড়গুলো ঘিরে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। সন্ত্রাসীদের সংখ্যা ৩ থেকে ৪ শ। যারা পাহাড়ে পাহাড়ে তৈরি করেছে বিশেষ আস্তানা। অভিযোগ রয়েছে, কিছু সংখ্যক স্থানীয়দের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে চলছে এমন অপরাধ। বিগত সরকারের সময়চক্রটির সঙ্গে কতিপয় প্রভাবশালীর সখ্যতা ছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এসেও তা বন্ধ না হওয়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়েছে বহুগুণ।’
‘গত এক সপ্তাহে অপহরণ করা হয়েছে ৩০ জনকে। যার মধ্যে দুজন এখনও জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন। টেকনাফের মানুষ মনে করে, সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হলে এমন ভয়াবহ অপরাধ রোধ করা সম্ভব’— বলেন নুপা আলম।
কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট হাসান সিদ্দিকী, টেকনাফের ব্যবসায়ী এইচএম ওসমান গণি, চাকরিজীবী হাসান আলী, সাংবাদিক আহসান কুতুবি, মুহিব উল্লাহ মুহিব, সাজন বড়ুয়া, ইব্রাহিম, মোহাম্মদ রাসেল প্রমুখ।
কর্মসূচি শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন আহমদ।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘টেকনাফের অপহরণের বিষয়ে প্রশাসন অবহিত রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান অব্যাহত রাখলেও রোধ করা যাচ্ছে না। স্মারকলিপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।’
পাঠকের মতামত