কক্সবাজারের টেকনাফে দিনদুপুরে অটোরিকশা থামিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করা দুই রোহিঙ্গা মাছ ব্যবসায়ীকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ উদ্ধার করেছে। একই সঙ্গে আটক করা হয়েছে অপহরণে জড়িত তিন জনকে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিল মাঠপাড়া সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার ব্যক্তিরা হলেন- উখিয়া উপজেলার বালুখালি আট নম্বর ক্যাম্পের আবুল বাছেরের ছেলে মোহাম্মদ শামশু এবং বালুখালী ১১ নম্বর ক্যাম্পের আব্দুর শুক্কুরের ছেলে আনিছুল আলম।
গ্রেপ্তাররা হলেন, টেকনাফ পৌরসভার ইসলামাবাদ এলাকার মোহাম্মদ সাইফুল, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিল মাঠপাড়ার মরিয়ম বেগম (৫০) ও নাছিমা আক্তার (৩০)।
এর আগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিল মাঠপাড়ায় অটোরিকশা থামিয়ে অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে অপহরণ করা হয় এই দুইজনকে।
উদ্ধার ব্যক্তিরা জানান, বালুখালী ক্যাম্প থেকে মাছ কিনতে টেকনাফে আসেন। টেকনাফ বাজারে মাছ না পেয়ে অটোরিকশা যোগে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর যাওয়ার পথে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের কাছে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পাহাড়ে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকে জনতা তাদের উদ্ধার করেছে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন, অপহরণের সময় স্থানীয় এক ব্যক্তি কৌশলে মোবাইল দিয়ে ভিডিও করেন। পরে বিষয়টি পুলিশ অবহিত করেছেন। ভিডিওতে ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের কয়েকজনকে শনাক্ত করা গেছে।
তারা হলেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিল মাঠপাড়ার বাসিন্দা মজিব উল্লাহ, শওকত উল্লাহ, লম্বরী এলাকার মো. শহীদ, নতুন পল্লান পাড়ার মো. হাশিম এবং হাতিয়ারঘোনা এলাকার মো. নয়ন।
তিনি বলেন, বিষয়টি পুলিশে জানানোর পর স্থানীয় জনতাকে সঙ্গে নিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, আটকদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। জড়িত অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের তথ্য বলছে, এনিয়ে গত এক বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৪০ জনের অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৮৩ জন স্থানীয় বাসিন্দা, ৫৬ জন রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৬৯ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন।
টেকনাফ থানার তথ্য মতে, ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট থেকে নভেম্বরের এই পর্যন্ত টেকনাফ থানায় অপহরণের মামলা হয়েছে ১২ টি। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা অন্তত ৫০। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২০ জনকে।