টেকনাফে স্বামীর সঙ্গে অভিমানে বিষ পান করে দুই শিশুসন্তান নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দেন গৃহবধূ। পরে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এতে পানিতে নিখোঁজ রয়েছে ৪০ দিনের মেয়েশিশু। এ ঘটনায় মুমূর্ষু অবস্থায় আরেক ছেলেশিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বেইংগাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
লাশ উদ্ধার হওয়া গৃহবধূর নাম রুমানা আক্তার রুনি (৩২)। তিনি টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরপাড়া এলাকার মৃত নজির আহমদের মেয়ে ও সাবরাং ইউনিয়নের বেইংগাপাড়া বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাকের স্ত্রী। এতে নিখোঁজ আছে ৪০ দিনের মেয়েশিশু রুবি। হাসপাতালে নেওয়া ৫ বছর বয়সী ছেলের নাম মো. ইয়াছিন।
সাবরাং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সেলিম বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে এক মাস ধরে গৃহবধূর স্বামী আবদুর রাজ্জাককে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। স্বামীর ওপর অভিমান করে দুই ছেলে-মেয়েকে বিষপান করিয়ে এবং নিজে বিষপান করে আত্মহত্যা করতে পুকুরে ঝাঁপ দেন ওই গৃহবধূ। গৃহবধূর অপর এক ছেলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে মো. ইয়াছিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। পরে দুপুরে গৃহবধূর লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
নিহত গৃহবধূর ৯ বছর বয়সী বড় ছেলে মোহাম্মদ বলে, দীর্ঘদিন ধরে তার বাবা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না। তাদের খাবারের ব্যবস্থাও করে দিচ্ছেন না। এক মাস ধরে বাবা বাড়িতেও আসছেন না। মা ফোন করলে বাবা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। আজ সকালে তাদের মা তিন ভাই-বোনকে ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। ওষুধ মুখে দেওয়ার সময় গন্ধ পেয়ে সে না খেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ছোট দুই ভাই-বোনকে ওষুধ খাইয়ে দুজনকে নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দেন মা। এ সময় সে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন পুকুর থেকে ছোট ভাই ইয়াছিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিয়াদ মাহমুদ ফায়েজ চৌধুরী বলেন, বেলা ১১টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় মো. ইয়াছিন নামের এক শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
টেকনাফ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দলপতির অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উত্তম কুমার ব্যানার্জি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রুমানা আক্তারকে মৃত অবস্থায় পুকুর থেকে উদ্ধার করেন। তবে ৪০ দিনের শিশুকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন মজুমদার বলেন, গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে।
পাঠকের মতামত