সাইদুল ইসলাম ফরহাদ:
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় বাবাকে না পেয়ে কিশোর ছেলেকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় দেশব্যাপি আলোচনার ঝর উঠে।এই ঘটনার পর রাত ১টার দিকে টেকনাফ মডেল থানার মিডিয়া সেলের
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি খুদে বার্তায় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মতবিনিময় সভার আমন্ত্রণ জানান টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি গিয়াস উদ্দিন।
৩০ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফ মডেল থানায় ওসির কক্ষে স্থানীয় ৩০জন সাংবাদিক ঐ মত বিনিময় সভায় উপস্থিত হন।
এসময় ওসি গিয়াস উদ্দিন, টেকনাফে মাদক, মানব পাচার,অপহরণ, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার সহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। পুলিশ নিয়ে ইতিবাচকভাবে লেখেনএমন প্রত্যাশা করেন তিনি।
এবং অপরাধীরা যেই দলেরই হোক না ছাড় দেয়া হবে না তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে হুশিয়ারি দেওয়া হয়।
মতবিনিময় সভা শেষে পুলিশের দুইজন সদস্য সাংবাদিকদের হাতে নাশতার প্যাকেট তুলে দেন।নাস্তার প্যাকেটের সাথে একটি হলুদ রঙের
খাম দেওয়া হয়।খামে একটি এক হাজার টাকার নোট আরেকটি পাঁচ শত টাকার নোট দেখা যায়। খামে দেওয়া টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংবাদিকরা।
টেকনাফের এক সাংবাদিক বলেন, সংবাদ প্রচারের জন্য সাংবাদিকদের টাকা দেওয়া পুলিশের জন্য খুবই বিব্রতকর।
জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন খেলাঘর জেলা কমিটির সভাপতি সুবিমল পাল পান্না জানান, সম্প্রতি টেকনাফ মডেল থানা কর্তৃক পিতাকে না পেয়ে পুত্র শিশুকে আটকে অস্ত্র মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার করার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
বিষয়টি যেমন দুঃখজনক তেমনি নিন্দনীয়।
এতে শিশু সুরক্ষা আইন লঙ্ঘিত হয়েছে উক্ত ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে চাকরি করার নৈতিকতা হারিয়েছে।
আমি মনে করি উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিধিমতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত না হলে ওরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে শুরুতে এদের লাগাম টেনে ধরতে হবে।
এবং বিষয়টি ধাপাচাপা দেওয়ার জন্য টেকনাফ থানার ওসি নানা অনৈতিক সুবিধা দিচ্ছে বিভিন্ন জনকে এটি যদি সত্যি হয় তাহলে আটক শিশুটির পরিবার ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। থানার ওসি খামে করে যে টাকা দিয়েছে সেটির উৎস কোথায় সেটি বের করা দরকার। না হয় টেকনাফে আবারও ওসি প্রদীপের যোগ শুরু হবে।
বিষয়টি অস্বীকার করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, শুধু নাস্তার প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। অন্য কোন কিছু হয়নি।এইরকম হাওয়ার কথা না।
এদিকে টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফিকে অস্ত্র মামলায় কারাগারে পাঠানো নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীর পরিবার ও প্রতিবেশীরা বলছেন, যুবলীগ নেতা বাবাকে ঘরে না পেয়ে গত ২৬ নভেম্বর ভোরে ওই শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাকে অস্ত্র মামলায় আদালতে পাঠানো হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ভোরে রাস্তায় অভিযান চালিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এ সময় তার হাতে থাকা ব্যাগ থেকে বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও পুলিশের করা মামলার দুই সাক্ষী বলেছেন ভিন্ন কথা।
পাঠকের মতামত