উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩/১০/২০২২ ৭:৫১ এএম
সেন্টমার্টিন জেডিঘাট/ ছবি – ওবাইদুল হক চৌধুরী

আসন্ন পর্যটন মৌসুমে জাহাজ চলাচলে অনিশ্চয়তা
আসন্ন পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। পহেলা অক্টোবর থেকে জাহাজ চলাচলের কথা থাকলেও মিয়ানমারের উত্তেজনার আঁচে নিরাপত্তা স্বার্থে জাহাজ আপাতত চালু হচ্ছে না। যদিও নাব্যতা সংকটের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে দাবি করছে জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন।

দেশের সর্ব-দক্ষিণের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। দ্বীপের স্বচ্ছ নীল জলরাশি, পাথুরে সৈকত, গাংচিল ও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য মন টানে যেকোনো মানুষের। তাই পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্য সেন্টমার্টিন। আর এই দ্বীপে যাওয়ার একমাত্র উপায় নৌরুট।

প্রায় ৬ মাস ধরে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে বন্ধ রয়েছে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। জাহাজ কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতি বছর অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত এ নৌরুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার।

সী ক্রুজ অপারেটরস্ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াব) এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে জাহাজ সরাসরি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যেতে পারবে। নাব্যতা সংকটের কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এ নৌরুট দিয়ে কোনো জাহাজ চলাচল করবে না। আপাতত আগামী ৬ অক্টোবর থেকে প্রাথমিকভাবে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে কর্ণফুলী জাহাজ রওনা হবে।

পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন, চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল করে ১০টি। এসব জাহাজে করে প্রতিদিন ৫ হাজারের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন সেন্টমার্টিন। তবে এবার নাব্যতা সংকটের কারণে আপাতত বন্ধ থাকছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল। শুধুমাত্র বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন আর চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিনে দুটি জাহাজ চলাচল করবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নাব্যতা নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। নাব্যতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এ জন্য টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে এই মুহূর্তে জাহাজ চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারী কর্ণফুলী জাহাজটির কর্তৃপক্ষ শুধু আবেদন করেছে। তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটেও জাহাজ চলাচলের অনুমতি প্রদানের দাবি জাহাজ মালিকদের সংগঠন।

হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার থেকে দুটি জাহাজ চলাচল করলে শুধুমাত্র ১ হাজার ৫০০ মতো পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন। তার উপর চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ অনেকটায় ব্যয়বহুল। এটা সাধারণ যারা পর্যটক রয়েছেন তাদের পক্ষে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, সহজ ও কম খরচে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারে পর্যটকরা। কিন্তু নাব্যতার কারণে এখন এই নৌরুটে ৮টি জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকলে এটা পর্যটনের উপর প্রভাব পড়বে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সকলের প্রতি অনুরোধ থাকবে, যতদ্রুত সম্ভব টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে যাতে পর্যটকবাহী জাহাজগুলো চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়।

গেল বছর সেন্টমার্টিন জেটির বেহাল দশার কারণে জাহাজ চলাচল শুরু হয় ১৮ নভেম্বর থেকে। জেটি সংস্কার হওয়ায় এবার আগেভাগেই জাহাজ চলাচলের জন্য সবধরনের প্রস্তুত নেয় জাহাজ কর্তৃপক্ষ।

পাঠকের মতামত