দীর্ঘ ৫ মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জলপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার থেকে। উক্ত রুটে চলাচলকারী ৩টি জাহাজ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের অনুমতি পেয়ে গতকাল বুধবার থেকে টিকেট বিক্রি শুরু করেছে। জাহাজগুলো হল কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন ও বে-ক্রুজ। শর্ত সাপেক্ষে এসব জাহাজকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে চলাচলের অনুমোদন দেয় জেলা প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, গত ঈদের ছুটিতে সেন্টমার্টিন ভ্রমণেচ্ছু অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন। কিন্তু টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জলপথে জাহাজ চলাচলের অনুমতি না পাওয়ায় হাজার হাজার পর্যটক হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেন। অবশেষে মঙ্গলবার শর্তসাপেক্ষে ৩টি জাহাজকে সমুদ্রপথে চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। এরমধ্যে কেয়ারী সিন্দাবাদ ও কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন আজ বৃহস্পতিবার থেকে এবং বে-ক্রুজ কাল শুক্রবার থেকে চলাচল শুরু করবে। ইতোমধ্যে তারা টিকেট বিক্রিও শুরু করেছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান- আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এতদিন সেন্টমার্টিনগামী জাহাজসমূহকে চলাচলের অনুমোদন দেয়া হয়নি। কিন্তু আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে এখন সাগর শান্ত থাকায় জাহাজ চলাচলের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। তবে শর্ত হিসাবে ফিটনেস লাইসেন্স থাকা,অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই না করা এবং আবহাওয়া অনকূলে থাকাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এসব শর্ত লঙ্ঘন করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের শাস্তি দেয়া হবে।
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারী অভিজাত প্রমোদ তরী কেয়ারী ট্যুরস এন্ড সার্ভিস লিমিটেড এর কক্সবাজার অফিস ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির জানান, শর্তসাপেক্ষে তাদের দুটি জাহাজকে চলাচলের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে টিকেট বিক্রিও শুরু হয়েছে এবং অনেক আগ্রহী পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণের জন্য টিকিট বুকিং দিয়েছেন। প্রশাসনের নির্দেশিকা মেনেই আজ বৃহস্পতিবার থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে। তবে অপর পর্যটকবাহী জাহাজ বে-ক্রুজ কাল শুক্রবার থেকেই চলাচল করবে বলে জানান এই কোম্পানীর ব্যবসা উন্নয়ন কর্মকর্তা আসাফ-উদ-দৌল্লাহ আশিক।
এ বিষয়ে ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টোয়াক বাংলাদেশ) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান বলেন-গত দুই ঈদের ভর মৌসুমেও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জলপথে জাহাজ চলাচলের অনুমতি না পাওয়ার অনেক পর্যটক হতাশ হয়ে কক্সবাজার ছেড়েছে। আবার অনেকেই কক্সবাজারের হোটেল বুকিং বাতিল করেছেন। এতে পর্যটন শিল্পে বিশেষ করে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিকরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তবে জেলা প্রশাসকের মতে, গত ঈদের সময় সাগরে নিম্নচাপের সম্ভাবনা ছিল। ফলে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়নি।