মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যাবে ডায়াবেটিস। মাত্র ৫টি তথ্য দিয়ে ঘরে বসেই জানা যাবে আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বা ঝুঁকিতে আছেন কি-না। অবস্থা অনুযায়ী দেয়া হবে চিকিৎসা, ডায়েট চার্ট ও শরীর চর্চার নির্দেশনা। অ্যাপটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আশা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখবে এই অ্যাপ।
বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ডায়াবেটিস এখন মহামারি হয়ে উঠছে। বাংলাদেশে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখের উপরে বলে ধারণা দিয়েছে আইডিএফ নামের আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা। এদের মধ্যে ৫৯ লাখেরও বেশি রোগী (প্রায় ৪৫ শতাংশ) ডায়াবেটিস-সেবার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সংখ্যা শতকরা ৯৫ ভাগ। শারীরিক পরিশ্রম কমে যাওয়া ও খাদ্যাভাসে পরিবর্তনের কারণে দ্রুত বাড়ছে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা। তবে সচেতন হলে এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা জানা থাকলে ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
এ অবস্থায়, ঘরে বসেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি নির্ণয়ে ডিআরসি নামে অ্যাপ তৈরি করেছে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। গত তিন বছর ঢাকা জেলার ৮টি উপজেলায় চলে অ্যাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। দশ হাজারের বেশি ব্যবহারকারীর মধ্যে দেখা যায়, ডায়াবেটিসের উচ্চ ঝুঁকিতে ৫৪ ভাগ, মাঝারি ঝুঁকিতে ৩৮ ভাগ আর ঝুঁকির বাইরে মাত্র ৭ ভাগ মানুষ।
অ্যাপটিতে নিবন্ধনের পর ওজন, উচ্চতা, রক্তচাপসহ ৫টি প্রাথমিক তথ্য দিতে হয়। এরপর জানা যায় ব্যক্তির অবস্থা। ঝুঁকি বিবেচনায় দেয়া হয় চিকিৎসা, খাদ্যতালিকা ও শরীর চর্চার পরামর্শপত্র।
ডায়াবেটিসের লক্ষণ প্রকাশ পেতে সময় লাগে। শনাক্তদের ৬১ ভাগই জানে না তাদের এই রোগ আছে। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, জটিলতা বাড়ার আগেই ঝুঁকিপূর্ণদের শনাক্ত করা গেলে বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন অনেক মানুষ।
সরকারিভাবে ডিআরসি অ্যাপের লিংক পাঠানো হচ্ছে মোবাইলে। দুই সপ্তাহ পর পাওয়া যাবে গুগল প্লে স্টোরে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশসহ সব উন্নয়নশীল দেশে খুব দ্রুত নগরায়ণ হচ্ছে। মানুষের দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে আনুপাতিক ও কাক্সিক্ষত হারের চেয়ে বেশি, মানুষের দৈহিক শ্রম দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে মানসিক চাপ বেড়েছে অনেকগুণ। উন্নত দেশগুলোতে ডায়াবেটিস রোগীর হার কমলেও তবে তা খুব উল্লেখযোগ্য হারে নয়।