পাইলট প্রকল্পের আওতায় ডিসেম্বরের মধ্যে স্বেচ্ছায় ফিরতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে ফেরত পাঠাতে একমত হয়েছে ঢাকা-নেপিদো। সোমবার মিয়ানমারের রাজধানীতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে দুই দেশের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, বৈঠক শেষে মঙ্গলবার নেপিদো থেকে ঢাকা ফিরবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনু বিভাগের মহাপরিচালক মিয়া মো. মাইনুল কবিরের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল।
সূত্র জানায়, বৈঠকে রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আস্থা তৈরির পদক্ষেপের বিষয়ে দুই দেশের কর্মকর্তারা কথা বলেন। পরিবার ভিত্তিক, অঞ্চল ভিত্তিক ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনকে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। পাইলট প্রকল্প হিসেবে তিন হাজার রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছে মিয়ানমারকে।
রোহিঙ্গারা যদি নিরাপদ বোধ না করে, তাহলে বাংলাদেশ কোনো রোহিঙ্গাকে জোর করে রাখাইনে পাঠাবে না বলেও জানিয়েছে। তবে প্রত্যাবাসন শুরুর আগে
মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে কক্সবাজার আসবে বলে জানা গেছে।
এর আগে, চলতি বছরের ৫ মে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের পরিবেশ-পরিস্থিতি পরিদর্শনে বাংলাদেশে বসবাসরত ২০ রোহিঙ্গাসহ ২৭ জনের একটি প্রতিনিধিদল মিয়ানমারে যান।
আরআরআরসি সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরুর পর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছে প্রত্যাবাসনে ৮ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা দিয়েছিল। সেই তালিকা যাচাই-বাছাই করে মাত্র ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা চূড়ান্ত করে তা বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠিয়েছিল মিয়ানমার।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে শুরু থেকেই সরকার জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিদেশীয় উদ্যোগসহ আন্তর্জাতিক সব ফোরামেই ইস্যুটি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরছে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় চলছে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের পরীক্ষামূলক ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া। মিয়ানমারের সামরিক সরকার রাজি হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে থমকে ছিল পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন।
পাঠকের মতামত