টেকনাফের হ্নীলা রঙিখালীতে ড. গাজী কামরুল ইসলাম বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সামাজিক ও শিক্ষামূলক সংগঠন রঙিখালী স্টুডেন্ট ফোরামের গঠনতন্ত্র মোতাবেক টেকনাফ উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ে ৪র্থ শ্রেনী স্কুল-মাদ্রাসা এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ৭ম শ্রেনী স্কুল-মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রীদের অংশগ্রহনে শনিবার সকালে ২০২৩ সালের বৃত্তি প্রদানের লক্ষে নির্দিষ্ট সিলেবাসে শান্তিপূর্ন পরিবেশে রঙিখালী ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা কেন্দ্রে বৃত্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষায় ৪র্থ শ্রেনী-স্কুল ১৯৫, মাদ্রাসা ১৭০ জন এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ৭ম শ্রেনী-স্কুল ১৮৭ ও মাদ্রাসা ১৬৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। উপজেলার ৮২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ৭১৯ জন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাস্টার মোঃ হেলাল উদ্দিন এবং কেন্দ্র সচিব মাস্টার মনছুর আলম জানান, টেকনাফ উপজেলার ৮২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল ও মাদ্রাসা) থেকে ছাত্র/ছাত্রীরা সুন্দরভাবে পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
রঙিখালী স্টুডেন্ট ফোরাম এর সভাপতি শাখাওয়াত হোছাইন ও সাধারণ সম্পাদক মোকতার হোসাইন সোহেল বলেন, ২০১৬ সাল থেকে টেকনাফের অন্যতম সামাজিক সংগঠন “রঙিখালী স্টুডেন্ট ফোরামের” উদ্যোগে এই বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।টেকনাফ উপজেলার স্কুল ও মাদ্রাসা উভয় বিভাগ থেকে এইবারে ৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪র্থ ও ৭ম শ্রেণি থেকে ৭১৯ জন শিক্ষার্থী পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। প্রতিবারের ন্যায় এইবারেও স্বাচ্ছন্দ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃত্তি পরীক্ষাচলাকালে পরিদর্শনে আসা অতিথিরা বলেন, ছেলে-মেয়েদেরকে সুশিক্ষায় গড়ে তুলতে হবে, তাদেরকে সত্য কথা বলতে শিখতে হবে।
পরিদর্শনে আসা সাবেক ছাত্রনেতা তারেক মাহমুদ রনি বলেন, এ বৃত্তি দেয়ার উদ্দেশ্য কিছু টাকা দেয়া না, এর উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে উদ্বুদ্ধ করা। সে জন্য অভিভাবকদেরকে শিক্ষার্থীদের প্রতি আরো যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
টেকনাফ উপজেলা একাডেমীক সুপারভাইজার নুরুল আবছার বলেন, আমি সব সময়ই শিক্ষা নিয়ে ভাবি এবং শিক্ষা নিয়ে কাজ করি, তারই অংশ হিসেবে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণে এ বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন দেখে এবং পরিদর্শন করতে পেরে আমি আনন্দিত, ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বৃত্তি পরীক্ষা সফল আয়োজনে সহযোগিতা কারি সংশ্লিষ্ট সকলে প্রতি তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এছাড়া কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন, হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুস সালাম, সুফিয়া নুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মৌলানা নাসির উদ্দিন, হাফেজ মাওলানা আবু সাঈদ, শামশুদ্দিন কাদের, টেকনাফ পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ মনির, কলিম উল্লাহ বাহাদুর, সাংবাদিক জসিম উদ্দিন টিপু, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক বণিক বার্তার কক্সবাজার প্রতিনিধি ছৈয়দ আলম, এশিয়ান টিভি ও দৈনিক যুগান্তর এর টেকনাফ প্রতিনিধি নাছির উদ্দিন রাজ, স্টুডেন্ট ফোরামের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন, ছাত্রলীগ নেতা নাছির উদ্দিনসহ প্রমূখ।
পরিক্ষা কেন্দ্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আগত পরীক্ষার্থীদের অভিভাবক, শিক্ষানুরাগী, মাদ্রাসার শিক্ষকগণ, ফোরামের সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরীক্ষা শেষে রাত ১০ টায় ফলাফল ঘোষনা করা হয়। এতে উপজেলার ৬০ জন মেধাবী মূখ ট্যালেন্টপুল, সাধারণ ও প্রতিভাধর ক্যাটাগরিতে বৃত্তি লাভ করেন। ফলাফল ঘোষনা করেন-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাষ্টার হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্র সচিব মাষ্টার মনছুর আলম, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মৌলানা আতাউল হক বিন মুছা ও প্রভাষক শাহিন সরওয়ার। এসময় হল পরিদর্শক মামুনুর রশীদ, দেলোয়ার হোসাইন রাজু, মুবিনুল হক, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, রিদুয়ানুল ইসলাম রিমন, জসিম উদ্দিন, কফিল উদ্দিন, মোহাম্মদ ইসমাঈল, আবু হানিফ, আফসার মাহমুদ, ওমর ফারুক, কামরুল হাসান, আলাউদ্দিন সাঈদী, সাদ্দাম হোসাইন, জামাল উদ্দিন, মোহাম্মদ সাদেকসহ স্টুডেন্ট ফোরামের সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। চ
ফলাফল ঘোষনার পর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাষ্টার হেলাল উদ্দিন ও কেন্দ্র সচিব মাষ্টার মনছুর আলম শিক্ষার্থীদের উদ্দোশ্য করে বলেন, এই বছরে তোমরা যারা বৃত্তি পেতে সক্ষম হয়েছো। সবাইকে জানাচ্ছি প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। আর যারা এবার সফল হতে পারোনি, তোমাদের প্রতিও আমাদের পক্ষ থেকে থাকবে সবসময়ের জন্য শুভকামনা। এই দেশে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই। নিজেকে একজন আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলে নৈতিকতা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে। এ সময় তাঁরা জন্মভূমির প্রতি দায়বদ্ধতা যথাযথ পালন করার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।