ওয়াশপুরের মোড়ের সড়কে দুটি ট্রাক রেখে ব্যারিকেড তৈরি করেছে পুলিশ। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন জরুরি কাজে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। সেই সড়কে অল্পতেই যানজট তৈরি হচ্ছে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টায় সরেজমিন সেখানে আধা ঘণ্টা অবস্থান করে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ জানিয়েছে, তারা নিয়মিত কাজের অংশ এবং নাশকতা রোধে এমন কাজ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোর সাতটার আগে থেকে ওয়াশপুর মোড়ে দুটি ট্রাক রাস্তার মাঝে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ট্রাক দুটির একটি খালি আরেকটিতে ইট বোঝাই রয়েছে। ট্রাট দুটি ঠিক ওয়াশপুর মাদরাসার গেটের ১০ ফুট উত্তর ও দক্ষিণ করে রাখা হয়েছে। ট্রাকের পাশে চালক ও হেলপাররা দাঁড়িয়ে গল্প করছেন।
ট্রাক দুটির উত্তর অংশে একটি বাস যাওয়ার মতো জায়গা রাখা হয়েছে। সেখান দিয়ে সিএনজি ও বাস চলতে গিয়ে অনেক সময় লাগছে। ফলে আরশিনগর থেকে আসা গাড়ির জট বাঁধছে।
এ কারণে কোনো সিএনজিও ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় আসতে চাচ্ছে না। আর আসলে ভাড়া বেশি হাঁকাচ্ছেন। পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাসপাতালমুখী লোকজন।
সেখানে ট্রাক দুটির পাশে থাকা চালক ও হেলপারের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা পুলিশের ভয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে তারা একটা কথাই বলছেন, মামা পুলিশ আছে, কোনো কথা বলা যাইব না।
আমিনা বেগম মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি হাসপাতালে চোখ দেখাবেন। তিনি আটিবাজার থেকে নানা নাটকের পর ওয়াশপুর আসলে সিএনজি তাকে নামিয়ে দেয়। এরপর তিনি আরেকটি সিএনজিতে মোহাম্মদপুর রওনা হন।
পথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ মাইনষেরে যাইবার সুযোগ দিবো কিন্তু তারাই উল্টা আটকায়।’
আটিআাজার থেকে সকাল আটটায় জরুরি কাজে মোহাম্মদপুর এসেছিলেন আজগর আলী। তখনও তিনি এমন দৃশ্য দেখেছেন বলে জানান।
কলাতিয়া থেকে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ পর্যন্ত নিয়মিত সিএনজি চালান রুবেল আহমেদ। তিনি বলেন, সকাল থেকে ৮ বার ট্রিপ মেরেছেন। প্রত্যেক ট্রিপে তিনি সেখানে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছেন। গাড়ি ধীর করে চলতে হয়েছে। ফলে অন্যদিন যা ট্রিপ মারতে পারতেন আজ তার অর্ধেক পেয়েছেন তিনি।
ট্রাক দুটিসহ সেই সড়কের ছবি ধারণ করতে গেলে বাধা দেন সেখানে দায়িত্বপালনকারী পুলিশের এএসআই মহিউদ্দিন। এসময় তিনি এই প্রতিবেদকের আইডি কার্ড দেখতে চান। এরপর পরিচয়পত্র দেখালে তিনি কিছুটা দমে যান। এরপর তার কাছে ট্রাক দুটি রাখার কারণ জানতে চাইলে বলেন, আসলে সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে এমনটি করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর তুলে নেওয়া হবে।
এসময় তার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয় আপনারা কোন থানা থেকে দায়িত্ব পালন করতে এসেছেন। তার জবাব ছিল সাভার থানা। তার কথার সূত্র ধরে সাভার থানার ওসিকে কল করা হলে তিনি বলেন, ওই এলাকা তার মাঝে নয়। সেটা হাজারীবাগের অংশ।
এবার হাজারীবাগ থানায় কল করা হলে ওসি বলেন, সেটা কেরানীগঞ্জ থানার মধ্যে। এরপর কেরানীগঞ্জ থানায় কল করা হলে ওসিকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।
সর্বশেষ ফোন করা হয় ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে।
ট্রাক দুটি সড়কের মাঝে রাখার বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাবুদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, এটি একটি পুলিশিংয়ের অংশ। যে কোনো ধরনের নাশকতা রোধে এই ধরনের উদ্যোগ। এতে মানুষের কোনো ভোগান্তি হচ্ছে না কারণ আজ শুক্রবার। লোকজনের যাদের অফিস রয়েছে তারা নির্দ্বিধায় আসছে।