দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার মধ্যে সরাসরি চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা এখন সময়ের দাবি বলে জানিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেছেন, কক্সবাজারের সঙ্গে যাতায়াত সহজতর করার জন্য এটাই হবে একমাত্র উপায়।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, কক্সবাজারের উন্নয়নে ইতিমধ্যে যেসব প্রকল্প কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে উত্থাপন করেছে সেগুলো বাস্তবায়নে তিনি নিজেও ভূমিকা পালন করবেন। এসব প্রকল্পের মধ্যে মাত্র কয়েকটিও যদি বাস্তবায়ন হয় তাহলে পাল্টে যাবে কক্সবাজারের চেহারা।
শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন দাবির কথা উত্থাপন করেছেন। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেছেন, সরাসরি রাজধানী ঢাকার সঙ্গে কক্সবাজারের যোগাযোগ স্থাপিত হওয়া মানেই সারা দেশের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া। এরকম সহজতর যোগাযোগ স্থাপিত হলে সারা বছরই ভ্রমণকারীদের জমজমাট আসর বসবে কক্সবাজার সৈকতে।
অনুষ্ঠানে এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর (অবসরপ্রাপ্ত) মো. নুরুল আবছার বলেন, বর্তমানে যানবাহনে কক্সবাজার যাতায়াতে ভ্রমণকারীদের বেশি সময় লাগে।
যেহেতু মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে জ্যাম লেগে থাকে। বিলম্ব যাত্রায় অনেক সময় ভ্রমণকারীরা ভ্রমণে নিরুৎসাহ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, তদুপরি রেল চালু হলেও এখনো সীমিত পর্যায়ে থাকায় যাত্রী চাহিদা মিটানো এক প্রকার দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তাই ঢাকা-কক্সবাজারের সঙ্গে চার লেনের সরাসরি যান চলাচল এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি কক্সবাজার ভ্রমণে আসলে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) তাঁর সম্মানে গত রাতে এক সংবর্ধনার আয়োজন করে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কউক চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছার বলেন, চট্টগ্রামের গর্বিত ব্যবসায়ী মাহবুবুল আলম একটানা ৫ বার চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘকাল পর ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর মতো বিশাল একটি জাতীয় পর্যায়ের সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চট্টগ্রামেরই এই গর্বিত সন্তান।
কউক চেয়ারম্যান দেশের পর্যটন শিল্পের স্বার্থে কক্সবাজারের পর্যটনের উন্নয়ন ও বিকাশে ভূমিকা পালনের জন্য এফবিসিসিআই চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান। কউক চেয়ারম্যান কক্সবাজারের পর্যটনকে এগিয়ে নিতে ইতিমধ্যে মাস্টারপ্ল্যানের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বলে জানান।
সেই সঙ্গে কক্সবাজারের উন্নয়নে ৩৪টি উন্নয়ন প্রকল্প তৈরির চিত্রও তিনি তুলে ধরেন। এসব প্রকল্পের মধ্যে মহেশখালী-কক্সবাজার ও কক্সবাজার-টেকনাফ পর্যন্ত কেবল কার, সাগর পাড়ে আন্তর্জাতিক মানের কনভেনসন সেন্টার, কক্সডা স্কাইলাইন টাওয়ার, বেভিউ কনডোমিনিয়াম, ফ্লুটিং রেস্টুরেন্ট, থিম পার্ক এবং ইকো রিসোর্ট, কক্সডা স্মার্ট সিটি, কক্সডা আন্ডার ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, কক্সডা হাউজিং কমপ্লেক্সসহ ইত্যাদি। সেই সঙ্গে সাগর পাড়ে তারকা মানের হোটেল, মেরিন ড্রাইভ থেকে টেকনাফের সাবরাং এবং সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যন্ত স্থানে আরো অনেক আকর্ষণীয় প্রকল্প নির্মাণ করা হবে। এসব প্রকল্পের মধ্যে ইতিমধ্যে ২২টি প্রকল্প সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে বিচেনায় রয়েছে। পরে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা ছাড়াও কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুল শুকুর সিআইপি, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম, কক্সবাজার ওমেন চেম্বারের সভানেত্রী জাহানারা ইসলামসহ আরো অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।