চলতি বছর রোহিঙ্গাদের দেখভালের জন্য ৮৮ কোটি মার্কিন ডলার আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে রোহিঙ্গাদের জরুরি চাহিদা মেটাতে এ সহায়তার প্রস্তাব করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
এর মধ্যে ১০ কোটি ডলার খরচ হবে ভাসানচরে বসবাসরতদের জন্য। যদিও এক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে তহবিলের পরিমাণ ধরে রাখাটা কঠিন হবে। এ ছাড়া প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।
দীর্ঘ ৫ বছর ধরে মিয়ানমারের বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অবস্থান করছে বাংলাদেশের কক্সবাজারে। প্রথমদিকে প্রভাবশালী দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এ উদ্বাস্তুদের জন্য মানবিক সহায়তার আশ্বাস ছিল বড় অঙ্কের। দিন যত গড়াচ্ছে আগ্রহের পরিমাণ কমতে শুরু করেছে এ শরণার্থী সমস্যার।
এমন প্রেক্ষাপটে আর্থিক সহায়তা তহবিল নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান-জেআরপির পঞ্চম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় গতকাল মঙ্গলবার। সম্মেলনে তহবিল সংগ্রহের পাশাপাশি কক্সবাজার ও ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানায় জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা-ইউএনএইচসিআর ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-আইওএম।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম মন্ত্রণালয় থেকে ভার্চুয়ালি এ সম্মেলনে যোগ দিয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি স্থানীয়দের খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবার মতো জরুরি চাহিদা মেটাতে ৮৮১ মার্কিন মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রস্তাব করেন।
পরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপে তহবিলের ১০০ মিলিয়ন ডলার ভাসানচরে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা জানান তিনি। রোহিঙ্গাদের জন্য উজাড় হওয়া ৬০০ একর জমিতে ফের বনায়নের সিদ্ধান্তের কথাও জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
গত বছর জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান তহবিলের বাজেট ছিল ৯৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার ২৮ শতাংশই ছিল ঘাটতি। এ বছর ৫২ মিলিয়ন কমানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘমেয়াদে তহবিলের পরিমাণ ধরে রাখাটা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, অনুদান কমানোর সঙ্গে একটা কঠিন বার্তা আমাদের পররাষ্ট্রনীতির জন্য কূটনীতির জন্য আসছে। যেভাবেই হোক রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ছাড়া পথ খুব কঠিন হয়ে পড়বে বাংলাদেশের।
২০১৭ সালে রাখাইনে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর জাতিগত নিধন থেকে প্রাণে বাঁচতে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় কক্সবাজারে। এ ছাড়া আগে থেকেই প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু ছিল কক্সবাজারে। সুত্র: সময় টিভি
পাঠকের মতামত