শামীমুল ইসলাম ফয়সাল ::
গত মার্চ মাসে প্রায় প্রতিদিনই পাহাড় নিধন ঠেকাতে অভিযান পরিচালনা করেছেন উখিয়া রেঞ্জ এর বিট কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজ্জাদুজ্জামান।
দোছড়ি বিটের দায়িত্বে থাকলেও চৌকস বন রক্ষক হিসেবে কর্মক্ষেত্রে পরিচিত সাজ্জাদ ছুটে বেড়িয়েছেন উখিয়া রেঞ্জের প্রতিটি প্রান্তে।
মৃত্যুর আগে সর্বশেষ অভিযান গুলোতে ৬ টি ডাম্পার জব্দ করে তিনি মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছিলেন পাহাড়খেকোদের।
“তোকে ডাম্পারে পিষে মারবো!” ডাম্পার জব্দ করার পর বাকবিতন্ডায় এমন তীর্যক কথা বহুবার শুনেছেন অকুতোভয় সাজ্জাদ, সহকর্মীরা বলছেন তাকে হত্যার আগেই দেওয়া হয় এমন হুমকি।
উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা গ্রাম, যেখানে ৩১ মার্চ দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ডাম্পার চাপায় প্রাণ হারান সাজ্জাদ তার অদূরেই বাগান পাহাড় এলাকা।
এই এলাকাটি অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের পয়েন্ট হিসেবে পরিচিত, সেখানকার স্থানীয় শাহ আলমের পুত্র চালক কামাল উদ্দিনের ব্যবহৃত ডাম্পার তিন আগেই জব্দ করে বন বিভাগ।
ডাম্পার আটকের কারণে কামাল উদ্দিনের সাথে ওই সময় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় সাজ্জাদের।
একটি অসমর্থিত সূত্র বলছে, ঘাতক ডাম্পারের চালকের পাশের সিটে বসা ছিলেন জনৈক এক ব্যক্তি।
স্থানীয়রা অনেকেই ধারণা করছেন ঐ ব্যক্তিটি কামাল তবে কোন দায়িত্বশীল সূত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এঘটনায় ১ এপ্রিল (সোমবার) উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম বাদি হয়ে দায়ের করা মামলার এজাহারে কামাল সহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন।
এজাহারে বলা হয়, ১নং আসামী চালক বাপ্পিকে তার মালিক ২নং আসামী ছৈয়দ আলম এই হত্যাকান্ড ঘটাতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সহকর্মীকে হারিয়ে হতবিহ্বল গাজী শফিউল আলম জানান, “সাম্প্রতিক শুকনো মৌসুমে পাহাড়ের মাটি কাঁটার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় বন অপরাধীদের দমনে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সক্রিয় ছিলেন সাজ্জাদ, একারণে তিনি প্রাণনাশের হুমকিও পেয়েছিলেন।”
এদিকে মর্মান্তিক এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শামীম হোসাইন জানান, ” আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে, আমাদের তৎপরতা চলছে। রহস্য উদঘাটনে নিখুঁত তদন্তের স্বার্থ মাথায় রেখে এগুচ্ছি।”
রবিবার রাতে মুন্সিগঞ্জের নিজ গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত হন পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে সজল নামে পরিচিত ফরেস্ট্রি সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট এর ১৬ ব্যাচের ছাত্র সাজ্জাদুজ্জামান। সুত্র্র; টিটিএন
পাঠকের মতামত