শোয়ার ঘর ভারতে তো রান্নাঘর মিয়ানমারে! ভারতের মাটিতে ঘুম ভাঙল তো খাওয়া-দাওয়া সারতে যেতে হবে মিয়ানমারে। এমনই আজব অবস্থা আসামের মোন জেলার লোঙ্গা গ্রামে। মিয়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা এই গ্রামে জীবন কাটে ভিন্ দেশের সাহচর্যেই। গ্রামের অর্ধেকটা রয়েছে ভারতে, বাকি অর্ধেকটা মিয়ানমারে। গ্রাম-প্রধান কুঁড়ে ঘরের খানিকটা এ দেশে আর খানিকটা মিয়ানমারে।
স্থানীয় ভাষায় এই লোঙ্গা গ্রামে গ্রাম-প্রধানকে আঙ বলা হয়। ভারতের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়াই মিয়ানমারের যে কোনো জায়গায় ইচ্ছেমতো ঘোরার অনুমতি রয়েছে তার। শুধু তার নয়, এই অনুমতি রয়েছে আঙের ৬০ স্ত্রী-রও। লোঙ্গা গ্রামের ৩০% মানুষ মায়ানমারের বাসিন্দা। গ্রামের মধ্যে দিয়ে যাওয়া এই আন্তর্জাতিক সীমান্তে কোনো গোলমাল যাতে না ছড়ায় তার জন্য কড়া নজর রাখে ভারতীয় সেনা ও আসাম রাইফেলস।
১৬৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-মায়ানমার সীমান্তে দু-দেশের মানুষজনের জন্যই ‘ফ্রি মুভমেন্ট জোন’। ভারতীয়রা মিয়ানমারের ভেতরে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়া যেতে পারেন। মিয়ানমারের মানুষজনের জন্য পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়া এ দেশে সীমান্ত থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভেতরে আসার অনুমতি রয়েছে।
চলে দু-দেশের মানুষদের মধ্যে অবাধে ব্যবসা। তবে মিয়ানমারের মুদ্রার দাম অত্যন্ত কম হওয়ায় এখনও এই অঞ্চলে বিনিময় প্রথা চলে। অনেক সময় একই স্কুলে পড়ে দুই দেশের পড়ুয়ারা। অসুখ-বিসুখেই একই হাসপাতাল ব্যবহার করেন দুই পাড়ের বাসিন্দারা। আপাত শান্তিপূর্ণ হলেও মাদক ও অস্ত্রের চোরাচালান এই অঞ্চলের বড় সমস্যা।