[caption id="attachment_37637" align="alignleft" width="700"] ফাইল ছবি[/caption]দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস পর বৃহস্পতিবার খুলছে কক্সবাজারের সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজ। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের সকল পর্যটন কেন্দ্রে থাকছে না প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা। সুতরাং পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে হোটেলের ৫০ শতাংশ রুম ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও কক্সবাজার শহরের তারকামানের হোটেলগুলোতে বুকিং হয়েছে ৩০ শতাংশ।
হোটেলগুলো আশা করছেন; আগামী কিছু দিনের মধ্যে হোটেলের ৫০ শতাংশ রুমই বুকিং হবে। এরজন্য কিছু হোটেলও দিচ্ছে বিশেষ অফার। বিশেষ করে; দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেয়া আগত পর্যটকরা পাচ্ছে রুমে ৫০ শতাংশ ছাড়, বিনামূল্যে মাস্ক, স্যানিটাইজার ও গাড়ির সুবিধা। এছাড়াও পাচ্ছে বিশেষ পেস্টি।
তারকামানের সীগাল হোটেলের এজিএম মো. জিল্লুর হায়দার আরেফিন বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস বন্ধ থাকার পর আমরা শুরু করছি নতুন একটা প্যাকেজ দিয়ে। হানিমুন প্যাকেজ তো থাকছেই। প্রতিটি রুমে ৫০ শতাংশ বা ৪০ শতাংশ ছাড় রয়েছে। তবে পর্যটকের আগমনের হার বেশি হলে ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। সর্বোপরি ৪০ শতাংশ ছাড়ে এখন রুম বুকিং হচ্ছে। বিশেষ অফারের বিষয়ে মো. জিল্লুর হায়দার আরেফিন বলেন, যারা করোনার দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের জন্য থাকছে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি অফার। প্রথম তারা পাচ্ছে রুমে ৫০ শতাংশ ছাড়; পাচ্ছে বিমানবন্দর টু হোটেল গাড়িযোগে আসা যাওয়া সম্পূর্ণ ফি।
এরপর হোটেলের প্রবেশদ্বারে বিনামূল্যে দেয়া হবে মাস্ক ও স্যানিটাইজার। তারপর রুমে দেয়া হবে স্পেশাল পেস্টি অথবা পর্যটকরা যদি মিষ্টি জাতীয় পেস্টি খেতে না চায়; তাহলে তাদের জন্য থাকছে ডায়বেটিস পেস্টি। এরপরও যদি দেখি আরও নতুন কিছু যোগ করতে হচ্ছে তাহলে সেটাও করা হবে। সুরক্ষার ব্যাপারে মো. জিল্লুর হায়দার আরেফিন বলেন, আসুক পর্যটক; আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব পর্যটকদের সন্তুষ্ট রাখার জন্য। পর্যটকরা গাড়ি বা বিমান বন্দর থেকে নামার পর হতে হোটেল না ছাড়া পর্যন্ত সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মানা হবে। এজন্য গাড়ি, প্রবেশদ্বার, হোটেল স্টাফদের স্বাস্থ্যবিধি ও রুম পর্যন্ত সবকিছু নজর রয়েছে। বিশেষ করে হোটেলের সকল স্টাফদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হয়েছে।
সুতরাং আশা করি; আগত পর্যটকরা নিরাপদে হোটেল থাকতে পারবে। সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল রিসোর্টে সার্বিক বুকিংয়ের বিষয়ে মো. জিল্লুর হায়দার আরেফিন বলেন, “বুকিং হচ্ছে; তবে মানুষের মনে এখনো করোনার ভয় যায়নি। তবে সর্বশেষ যেভাবে কক্সবাজারে পর্যটক আগমন হয়েছিল বা রুম বুকিং ছিল সেভাবে তা হচ্ছে না। যেমন গেল লকডাউন খোলার পর কক্সবাজারের আসার জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল; সেটা হচ্ছে না। তবে আশা করছি; কক্সবাজারের পর্যটন সেই আগের অবস্থানে ফিরবে।” এদিকে বুধবার বিকেলে কলাতলীস্থ হোটেল মোটেল জোনে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়; হোটেল মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসগুলো পুরোপুরি প্রস্তুত পর্যটকদের স্বাগত জানাতে। এই ধোয়া-মোছা, রং ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করেছে। পাশাপাশি প্রবেশদ্বারে রাখা হয়েছে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র, রয়েছে মাস্ক ও স্যানিটাইজার। আর ট্যুরিস্ট পুলিশও নিয়েছে নানা পদক্ষেপ।
এব্যাপারে ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন; বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে প্রবেশে আর নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। সেহেতু পর্যটক আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি যাতে স্বাস্থ্যবিধি মানে এবং মাস্ক ব্যবহার করে তারজন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের বেশ কয়েকটি টহল টিম থাকবে।
এছাড়াও সৈকতে প্রবেশের প্রতিটি পয়েন্টে থাকবে আরও কয়েকটি টিম। তারা সবসময় মাইকিং করবে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে এবং মাস্ক ব্যবহার করতে। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটরাও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করবে। যদি পর্যটকরা মাস্ক ব্যবহার বা স্বাস্থ্যবিধি না মানে তাহলে জরিমানার আওতায় আনা হবে। এক্ষেত্রে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ সৈকতে দায়িত্বপ্রাপ্তরা সবাই একযোগে কাজ করবে।