প্রকাশিত: ০২/০৯/২০১৬ ৮:১৫ এএম

akm+kamrul_23940_1472718353আদালত অবমাননার দায়ে সরকারের দুই মন্ত্রীকে সাজা দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ।বুধবার আট বিচারপতির স্বাক্ষরের পর বৃহস্পতিবার সুপ্রিকোর্টের ওয়েবসাইটে এ রায় প্রকাশ করা হয়।রায়টি দ্বিধাবিভক্ত মতের ভিত্তিতে এসেছে। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাসহ পাঁচ বিচারপতি রায়ে বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন।

শপথ ভঙ্গের এ রায়ের সঙ্গে একমত পোষণকারী অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি মো. ইমান আলী ও বিচারপতি মির্জা হুসেইন হায়দার।

অন্যদিকে শপথ ভঙ্গের এ মতের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি নিজামুল হক।

গত ২৭ মার্চ আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করে দুই মন্ত্রীকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।

যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর চূড়ান্ত রায়ের আগে সর্বোচ্চ আদালতকে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য দুই মন্ত্রীর নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে এ রায় দেয়া হয়।

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

সংক্ষিপ্ত রায়ে বলা হয়েছিল, ‘দুই মন্ত্রীর নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে করা আবেদন গ্রহণ করতে আমরা অপারগ। তারা মন্ত্রী, তারা সংবিধান রক্ষায় শপথবদ্ধ। তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য আপাতদৃষ্টিতে উদ্দেশ্যমূলক, যেখানে প্রধান বিচারপতির কার্যালয় ও সর্বোচ্চ আদালতের মর্যাদা খাটো করা হয়েছে। …নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে তাদের আবেদন আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। গুরুতর আদালত অবমাননার দায়ে তারা দোষী।’

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি মীর কাসেম আলীর আপিল শুনানিকালে মামলাটির তদন্ত ও সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপনে দুর্বলতার কারণে প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার প্রতি গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। পাশপাশি রায়ের জন্য ৮ মার্চ দিন ধার্য করেন।

বিষয়টি নিয়ে আপিলের রায় ঘোষণার তিন দিন আগে সরকারের দুই মন্ত্রী বিরূপ মন্তব্য করেন।

রাজধানীর বিলিয়া সেন্টারে এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে পুনরায় মীর কাসেম আলীর আপিল শুনানির আহ্বান জানিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

তখন খাদ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘প্রধান বিচারপতি যে মন্তব্য করেছেন, তাতে আসামির মৃত্যুদণ্ড হওয়ার কোনো কারণই নেই। আমি নিশ্চিত যে, তার কথা থেকে তিনি বাইরে যেতে পারবেন না। আসামিকে হয় তিনি খালাস দেবেন, নয় সাজা কমিয়ে দেবেন, না হয় মামলা পুনর্বিচারে পাঠাবেন।’

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আর এরপরও যদি রায় অন্যরকম (মৃত্যুদণ্ড) হয়, তাহলে আবার অনেকে বলবে, সরকার চাপ দিয়ে রায় বহাল রেখেছে।’

একই সঙ্গে এই মামলা পরিচালনা থেকে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকেও বাদ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী।

একই অনুষ্ঠানে সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে সমালোচনায় লিপ্ত হন।

তিনি বলেছিলেন, ‘প্রধান বিচারপতি যদি ওপেন কোর্টে কোনো মন্তব্য করে থাকেন, তাহলে সেটা উনারই একজন বিচারপতি হিসেবে, একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে বোঝা উচিত। এবং এমনটা করে থাকলে আমি আহ্বান করব- উনি সেটা প্রত্যাহার করে নেবেন অথবা উনি এটা মনে করলে একজন প্রধান বিচারপতির পদে আসীন থাকার সুযোগ কতটা আছে, সেই বিচার তিনিই করবেন।’

পাঠকের মতামত

আমাদের নিয়ত সহিহ, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার হলেই নির্বাচন: সিইসি

অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন নতুন নির্বাচন কমিশনার ...

নির্বাচন কমিশন গঠন, নতুন সিইসি কক্সবাজারের সন্তান সাবেক সচিব নাসির উদ্দীন

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার সন্তান অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ ...