মিয়ানমারের একটি গ্রামের প্রায় দুই হাজার মুসলমানকে রবিবার তাদের ঘরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। বার্মিজ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর সাম্প্রতিক হামলার জের ধরে সংখ্যালঘু মুসলমানদের বিরুদ্ধে এই নির্মম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
মিয়ানমারের সেনারা রবিবার মধ্যাঞ্চলীয় মান্দালাই প্রদেশের ‘কি কান পিন’ গ্রামে প্রবেশ করে। এ সময় তারা সেখানকার সব মুসলিম অধিবাসীকে গ্রামটি ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। এ সময় জরুরি প্রয়োজনীয় সামগ্রী ছাড়া হতভাগ্য রোহিঙ্গাদের অন্য কিছু নিতে দেওয়া হয়নি। বর্তমানে এসব মুসলমান পার্শ্ববর্তী বন ও ধান ক্ষেতে লুকিয়ে দিনাতিপাত করছেন।
নিজ ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়া একজন মুসলমান সোমবার জানান, “গতকাল বিকেলে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমার পরিবারের সব সদস্যসহ প্রায় ২০০ মানুষ ধানক্ষেতে অবস্থান করছি। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। সেনারা গ্রামে ঢুকে আমাদের দ্রুত ঘরবাড়ি ত্যাগের নির্দেশ দিয়ে বলে, কথা না শুনলে তারা আমাদের গুলি করবে।”
মিয়ানমার সরকারের একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন, সরকারের পক্ষে ওই এলাকার কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। কারণ এলাকাটি সেনা অভিযানের একটি ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের জুনে মিয়ানমারে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় নিহত হন কয়েকশ রোহিঙ্গা মুসলিম। বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন রাখাইন রাজ্যের দুটো গ্রামের ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় উগ্রপন্থী বৌদ্ধরা। অন্তত এক হাজার ৬০০ ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। দাঙ্গায় অন্তত ৩০ হাজার মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হন। উগ্র বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সহায়তায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী নাসাকা, পুলিশ ও ‘লুন্টিন’ বাহিনী এই মুসলিমবিরোধী তাণ্ডব চালায়। জাতিসংঘের মতে, বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নিগৃহীত সংখ্যালঘু হচ্ছে রোহিঙ্গা মুসলিমরা।
সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স, পার্স টুডে, বাংলা ট্রিবিউন।