নিউজ ডেস্ক: দুই বাংলাদেশি কিশোরীকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দুবাই নিয়ে দেহব্যবসায় বাধ্য করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুবাইয়ের একটি আদালত সূত্রে জানা গেছে, কিশোরীদ্বয়ের বয়স ১৬ এবং ১৮। তাদের একটি স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টে বন্দি করে রাখা হতো। ওই আ্যাপার্টমেন্টটি পতিতালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
গত ১৩ এপ্রিল দুবাই পুলিশের অভিযানের এতদিন পর প্রকাশ্যে এসেছে এই ভয়ঙ্কর তথ্য। ঐ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীদ্বয়কে উদ্ধার করার সময় এক ভারতীয়(৪৬) এবং এক বাংলাদেশি(২৬) পাচারকারীকে আটক করা হয়। যদিও গ্রেপ্তারকৃতদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।–কালেরকন্ঠ।
কিশোরীদ্বয়ের একজন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “আমার অসুস্থ মা মাঠে কাজ করে খুবই স্বল্প টাকা আয় করতেন। এমতাবস্থায় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে গত জানুয়ারিতে আমাকে দুবাই এনে তিন দিন পর বলা হয় আমাকে দেহব্যবসা করতে হবে!”
পাচারকারীদের এই প্রস্তাবে সে রাজি না হওয়ায় চালানো হয় নির্যাতন। তাকে সেই অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বাইরে যেতে দেওয়া হতো না। বিনিময়ে তাকে সামান্য কিছু টাকা ধরিয়ে দেওয়া হতো।
অন্য কিশোরীকেও কাজ দেওয়ার কথা বলে গত জানুয়ারিতে দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। তাকেও একই অ্যাপার্টমেন্টে রাখা হয়। সেই কিশোরী বলেন, “আমি ওদের কথায় রাজি হইনি। ১৫ দিনেও যখন আমাকে ওরা রাজি করতে পারেনি তখন নির্যাতন শুরু করে। আমাকে নগ্ন করে ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। আমার কাছে যে খদ্দেররা আসতেন তাদের সবার
কাছেই সাহায্য চেয়েছি। কিন্তু কেউ আমাকে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করেনি।”
পুলিশ বলেছে, “দুই কিশোরীকে উদ্ধার করার পাশাপাশি ওই অ্যাপার্টমেন্ট থেকে দুই পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। সেখান থেকে কন্ট্রাসেপটিভ পিল, লুব্রিকেন্টস, পাসপোর্ট হিসাবের খাতা এবং বিপুল পরিমাণ মদের বোতল জব্দ করা হয়।”
পুলিশ আরও জানিয়েছে, “ভারতীয় পাচারকারীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, দেহব্যবসা, এক কিশোরীকে ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য তৈরি এবং অবৈধ শ্রমিক আনার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আর বাংলাদেশি যুবকের বিরুদ্ধে নারী পাচার এবং জাল ভিসার অভিযোগ আনা হয়েছে।”
অভিযুক্তরা আদালতে অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। উদ্ধারকৃত কিশোরীদ্বয়কে দুবাইয়ের একটি নারী ও শিশু ফাউন্ডেশনের জিম্মায় রাখা হয়েছে। মামলাটির পরবর্তী শুনানি ১৭ অক্টোবর।
পাঠকের মতামত