ফেনীর আকাশে রমজান মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় পবিত্র রমজানের প্রথম দিন মঙ্গলবার (৭ জুন)। রাতেই তারাবির নামাজ আদায় করে শেষ রাতে সেহেরি খেয়ে রোজা রাখবেন বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
অবশ্য রোববার চাঁদ দেখা যাওয়ায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে রোজা শুরুর ঘোষণা দেয়া হয়েছে সোমবার থেকেই। মধ্যপ্রাচের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশেও বেশকিছু অঞ্চলে মঙ্গলবার থেকে রোজা পালন শুরু করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সৌদি আরবের অনূকরণে এ বছর সোমবার থেকে রোজা পালন করছেন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরাও।
রোজা মুসলমানদের ফরজ ইবাদতের একটি। শরিয়তের পরিভাষায় সুবহে সাদিক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকাই হচ্ছে রোজা। অবশ্য পালনীয় এ রোজা মুসলমানদের উপর ফরজ করা হয়েছে হিজরি দ্বিতীয় বর্ষের শাবান মাসে।
হিজরি বর্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে গণনা শুরু হয় ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমরের শাসনামল থেকে। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মোহাম্মদ (সা.) মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের দিন থেকে এ বর্ষের সময় ধরা হয়। পরবর্তীতে মুসলিম জ্যোতিবিজ্ঞানিরা হিসাব করে আরবি এ বর্ষ শুরুর সময় নির্ধারণ করেন।
বিশিষ্ট মুহাদ্দিস আল্লামা ইউসুফ বান্নুরি (রহ.) বর্ণনা অনুয়ায়ী, হিজরি দ্বিতীয় সালের ১০ শাবান রোজা ফরজ করা হয় এবং ওই সালেই কিবলা পরিবর্তন, জাকাত ও সদকায়ে ফিতরের হুকুম প্রদান করা হয়।
আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া কিতাবে লেখেন, হিজরি দ্বিতীয় সনের শাবান মাসে বদর যুদ্ধের আগে রোজা ফরজ করা হয়।
রোজার ইতিহাস অনেক পুরনো। আগেকার নবী, রাসুলদের উম্মতরাও যে রোজা রেখেছেন এবং তাদের ওপরও যে রোজা ফরজ ছিল, পবিত্র কোরআন মজিদের নিম্নোক্ত আয়াত থেকে বোঝা যায়। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের ওপর, যাতে তোমরা পরহেজগারি অর্জন করতে পারো।’ (সূরা বাকারা-১৮৩)।
রোজার মাসকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। হাদিস শরীফে এসেছে, প্রথম ১০ দিন রহমতের, মাঝের ১০ দিন মাগফিরাতের এবং শেষ ১০ দিন নাজাতের। বিশ্লেষকদের মতে, রহমতের প্রথম ১০ দিন আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদের প্রতি রহমত বা দয়া বর্ষণ করবেন; দ্বিতীয় ১০ দিন আল্লাহ সুবহানাকা তাঁর বান্দাদের ক্ষমা প্রদর্শন করবেন এবং তৃতীয় ১০ দিন আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জাহান্নাম থেকে নাজাত বা মুক্তির ঘোষণা দেবেন।