প্রকাশিত: ১৬/০১/২০১৮ ৭:৫৩ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৮:০২ এএম

বিকেল ৪ টা! আসরের সুমধুর আযানের ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। মর্মে মর্মে সেই সুর। এই সুরের আহবানে সাড়া দিয়ে শত কর্মব্যস্ততা ছেড়ে নামাজ আদায় করতে ছুটে চলা মুসল্লিদের। আযান শোনামাত্র নামাজ আদায় করতে মসজিদের পানে চললাম। মসজিদটি দেশের বৃহত্তর এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। প্রকৃতি কন্যা নামে খ্যাত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অনন্য স্থাপত্যের মধ্যে এটি অন্যতম। ক্যাম্পাসে ঢুকলেই কৃষি অনুষদের পাশে চোখে পড়ে বৃহৎ মিনার বিশিষ্ট স্থাপনাটি। মসজিদটির অসাধারণ নির্মাণশৈলী ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে এক নতুন রুপ দিয়েছে। এটি বাকৃবির কেন্দ্রীয় মসজিদ।

প্রায় তিন যুগ আগে ১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মুহাম্মদ আমিনুল হক। এরপর ১৯৯৫ সালের ২ জুন মসজিদটির উদ্বোধন করা হয়।

চতুর্ভুজ আকৃতির এই মসজিদের মোট তিনটি অংশ রয়েছে। মূল ভবনটি মসজিদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা জুড়ে অবস্থিত। মূল ভবনে ২৬ টি কাতারে নামায পরা যায়। ভবনের বারান্দায় ১৩ টি কাতার রয়েছে। মূল অংশ এবং বারান্দা মিলে প্রায় ৪০০০ মানুষ একসাথে নামাজ আদায় করতে পারে। এর স্থাপত্য শৈলীর সব থেকে আকর্ষণীয় দিক হলো মূল কাঠামোর মধ্যবর্তী উপরের বিরাটকার গম্বুজ যা মোট ১২ টি পিলারের উপর অবস্থিত। গম্বুজের উপর রয়েছে একটি অর্ধ চাঁদ।

মসজিদের আঙ্গিনাকে মূল ক্যাম্পাস থেকে পৃথক করার জন্য দেয়ালে ঘেরা তিনটি করিডোর রয়েছে। যা মসজিদের বারান্দার এক পাশ থেকে শুরু হয়ে অন্য পাশে গিয়ে শেষ হয়েছে। এসব করিডোরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন বাগানবিলাস ফুলের সমোরাহ। যা মসজিদটিতে এনে দিয়েছে এক স্বর্গীয় সৌন্দর্য। মসজিদের বারান্দায় প্রবেশ করার জন্য পূর্ব পাশে মোট ২ টি, উত্তর এবং দক্ষিনে ২ টি সহ মোট ৪ টি দরজা রয়েছে।

এরপর বারান্দা থেকে মসজিদটির মূল ভবনে প্রবেশ করতে ৮ টি দরজা রয়েছে। এছাড়া মসজিদের পশ্চিম পাশে মুসল্লিদের ওজু করার জন্য সুব্যবস্থা রয়েছে। পূর্বপাশে রয়েছে একটি বিস্তৃত খোলা মাঠ। মসজিদে ইদের নামাযও আদায় করা হয়। ইদের দিনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারসহ আশেপাশের এলাকা থেকে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে আসে। এসময় মুসল্লিদের আগমন যেন মিলনমেলায় রুপ নেয়।

মসজিদটির সৌন্দর্য এবং নির্মল পরিবেশ মহান আল্লাহর সাথে একাগ্রতা বৃদ্ধি করে। এর অসাধারণ নির্মাণশৈলী দেখেই মন জুড়িয়ে যায়। ১২৫০ একরের ক্যাম্পাসে স্থাপনাটি যেন আপন মর্যাদায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

তাইতো হাজারো ব্যস্ততা ভুলে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ অন্যান্য মুসলমানরা একই কাতারে এক আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হাজির হই অসাধারণ নির্মাণশৈলী এই মসজিদটিতে।

পাঠকের মতামত

তুরস্কে কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশি হাফেজ

ইসলামী ঐতিহ্যের স্মৃতি বিজড়িত তুরস্কে অনুষ্ঠিত ৯ম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশি হাফেজ, ...