উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ৩০/০৮/২০২২ ১:০২ পিএম
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ / ছবি : ওবাইদুল হক চৌধুরী

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-ঘুমধুম নতুন রুটে রেল চালানোর তোড়জোড় চলছে। এ লক্ষ্যে সর্বাত্মক কাজ চলছে প্রকল্প এলাকায়। ইতোমধ্যে চকরিয়া, রামু, ঈদগাঁও, নাপিতখালী এলাকায় পৃথকভাবে প্রায় ৪২ কিলোমিটারের বেশি রেললাইন তৈরি হয়ে গেছে। ওই এলাকা ছাড়াও বর্তমানে সাতকানিয়া, লোহাগড়া, চুনতিসহ আরও কয়েকটি স্থানে ব্রিজ, কালভার্ট, রেললাইন নির্মাণ, মাটির কাজসহ বিভিন্ন কাজ চলছে।

সর্বশেষ গত জুলাই পর্যন্ত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ৭৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে পৃথকভাবে মাটিকাটার কাজ, ব্রিজ নির্মাণ, রেললাইন তৈরি, বিদ্যুৎ লাইনসহ নানা কর্মযজ্ঞ চলছে রাতদিন। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সড়কপথে পাঁচ-ছয় ঘণ্টার দূরত্বটা রেলপথে অর্ধেকে নেমে আসবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতে প্রায় ১০২ কিলোমিটার রেলপথ তৈরি হচ্ছে।

কক্সবাজারে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন। করোনা পরিস্থিতি, ভূমি জটিলতা, বিদ্যুৎ লাইন, নির্মাণ ত্রুটিসহ বেশ কিছু সমস্যার কারণে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।
দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী মো. মফিজুর রহমান বলেন, সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।

করোনা মহামারির মধ্যেও প্রকল্পের নির্মাণ কাজ থেমে ছিল না। ব্রিজ নির্মাণ, রেলট্রেক, বিদ্যুৎলাইন, মাটিকাটার কাজ, রেললাইনগুলোতে সিগন্যালের তার বসানোসহ নানান কাজ চলছে। প্রকল্পের প্রায় ৪২ কিলোমিটারের মতো রেললাইন প্রস্তুত হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। এরপর বাকি সময়গুলোর মধ্যে এই রেলপথে ট্রেনের ট্রায়াল শুরু হবে।
এতে কোনো ধরনের ত্রুটি থাকলে তা ঠিক করা হবে। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার জোর চেষ্টা করছি আমরা। একই কথা বললেন অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক (এপিডি) আবুল কালাম চৌধুরীও।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার রেলট্রেক বা রেললাইন বসানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে। পানির ছড়া বাজারের দলির ছড়া মৌজা থেকে শুরু হয়ে কক্সবাজারের দিকে লাইনটির কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে থেকেই চলছে প্রকল্পের আওতাধীন মাটি কাটা, ব্রিজ নির্মাণ, লেভেল ক্রসিং, কালভার্ট, স্টেশন তৈরিসহ প্রকল্পের সার্বিক কাজও। এই রেললাইনটি দ্রুত নির্মাণের মাধ্যমে যাতায়াত শুরু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ সারা দেশের সঙ্গে অর্থনীতি, পর্যটকদের আনাগোনাসহ নানা বিষয়ে যোগাযোগে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং এই অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার এবং রামু-ঘুনধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কি.মি., রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কি.মি. এবং কক্সবাজার থেকে ঘুনধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ হচ্ছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পর্যটক ও স্থানীয় জনগণের জন্য নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রবর্তন হবে। সহজে ও কম খরচে মাছ, লবণ, কাগজের কাঁচামাল, বনজ ও কৃষিজ দ্রব্যাদি পরিবহন করা যাবে। সূত্র জানায়, ১২৮ কি.মি. রেলপথে স্টেশন থাকছে ৯টি। এগুলো হলো- সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাঁও, রামু, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও ঘুনধুম। এতে থাকবে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম এবং ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম। সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ হবে তিনটি বড় সেতু। এ ছাড়াও এ রেলপথে নির্মিত হবে ৪৩টি ছোট সেতু, ২০১টি কালভার্ট এবং ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং। সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকায় তৈরি হবে একটি ফ্লাইওভার, রামু ও কক্সবাজার এলাকায় দুটি হাইওয়ে ক্রসিং। বিডি প্রতিদিন

পাঠকের মতামত

শিক্ষার্থীরাই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে : ইঞ্জিনিয়ার সহিদুজ্জামান

কক্সবাজার-০৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ঈদগাঁও রশিদ আহমেদ কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ...

উখিয়ায় বনবিভাগের পাহাড় কেটে তৈরি করছে বসতভিটা

কক্সবাজারের দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের ওয়ালাপালং বিটে রাজাপালং ইউনিয়নের উত্তরপুকুরিয়া পশ্চিমপাড়া এলাকায় বনবিভাগের সহযোগিতায় ...

প্রথম আলোর প্রতিবেদন পর্যটক নিয়ন্ত্রণে কমিটি, সেন্ট মার্টিনে যেতে নিবন্ধনসহ যা করতে হবে পর্যটকদের

প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজ নিয়ন্ত্রণে যৌথ কমিটি গঠন করেছে ...