কক্সবাজারে উখিয়ার দূর্গম অরণ্যে সত্য ধর্মের প্রবর্তক হিসেবে ক্লামং চাকমার স্বঘোষিত মহাপুরুষকে নিয়ে উখিয়া নিউজ ডটকম এর অনুসন্ধানে প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে রহস্যময়ী নানা তথ্য।
৮ আগষ্ট দুর্গম পাহাড়ী পথ পাড়ি দিয়ে সরেজমিনে প্রতিবেদনে জানা যায়, উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলার গ্রামের মং বাউ চাকমার ২ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে ক্লামং চাকমা বিগত ৭ বৎসর পূর্বে গহীণ অরণ্যে ধ্যান সাধনা করে সিদ্ধি লাভ করেছে বলে নিজেকে সত্য ধর্মের যাজক হিসেবে স্থানীয় উপজাতী সম্প্রদায়ীদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকে এখন থেকে মদ পান করা যাবে না, চুরি, ব্যভিচার করা যাবে না। এখন সত্য ধর্মের যুগ এসেছে। আর সত্য ধর্মের ধারকবাহক হিসেবে আমি যাই বলব তাই ধর্ম হিসেবে প্রতিপালন করতে হবে এবং পৃথিবীতেই তাই সংগঠিত হবে। আগামী এতদিনে ইসলাম ধর্মের একজন লোকও বেঁচে থাকবে না। সবাই মরবে। এ রকম ভবিষ্যতবাণীও করে থাকেন তিনি। অপরদিকে বুদ্ধ ধর্মের আড়াই হাজার বৎসর শেষ হয়ে গেছে। তাই এখন থেকে আমিই মহাপুরুষ হিসেবে আর্বিভুত হয়েছি। আর আমার বাবা হবে চক্রবর্তী রাজা।
তার এ স্বঘোষিত মহাপুরুষত্বের কথা গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে পড়লে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী তাকে এক নজর দেখতে ছুটে আসে। এমনকি বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও ত্রিপুরা সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে তেলখোলা গ্রামে প্রায় ৪/৫শ পরিবার স্থায়ী ভাবে বসতি স্থাপন করে। তার বাবা মং বাউ চাকমা চক্রবর্তী রাজা হিসেবে বসতি স্থাপন করা প্রজাদের নিকট খাজনা আদায় করে আসছে। কেউ খাজনা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদেরকে নির্মম ভাবে নির্যাতন করা হয় বলেও জানা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মানিক চাকমা বলেন এসব বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। কারণ কেউ তার এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার করে। তাছাড়া আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সবার ভাল কামনা করি এবং সবাইকে আমার প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে কবিরাজ চিন চং চাকমা বলেন, ক্লামং চাকমা প্রকাশ সত্য ধর্মের যাজক সত্যের কথায় প্রচার প্রচারণায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৪/৫ শ পরিবার স্থায়ী ভাবে বসতি স্থাপন করলেও স্থানীয় অনেকেই তার এসব কৃতকর্মের প্রতি আস্থা বা বিশ্বাস স্থাপন করেনি। আবার অনেকেই তার নির্দেশিত আচরণাদি প্রতিপালন করতে শুরু করে। কিন্তু ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন হতে থাকে যখন একজন মানুষ মারা যায় তাকে তার নির্দেশিত ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী কবরস্থ কিংবা দাহ করা হচ্ছে না। মৃত ব্যক্তির লাশটি ধর্মীয় কোন কার্যাদি না সেরে গহীণ অরণ্যে কিংবা পাহাড়ের চুড়া থেকে ফেলে দেওয়া হয়। তখন গ্রামবাসীর মনে নানা প্রশ্ন বাসা বাঁধে। এটা কোন ধর্মের অনুশাসন। একজন মুসলিম হলে তার মৃত্যুতে মৌলভী নিয়ে নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। বৌদ্ধ হলে বৌদ্ধ ভিক্ষু দরকার। হিন্দু হলে ব্রাহ্মণ দরকার। খ্রীষ্টান হলে ফাদার দরকার। কিন্তু সত্যর ধর্ম নামে এ কোন ধরণের ধর্ম প্রচার করছে ক্লামং চাকমা। একই ধরণের অভিমত ব্যক্ত করেন মাষ্টার চয়পুসিং চাকমা।
সত্য নামক ক্লামং চাকমা বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক মেম্বার কবির আহমদ (৬৮) বলেন, ক্লামং চাকমা এর বাবা মং বাউ চাকমাকে অনেক বৎসর আগে চুরির দায়ে একাধিক বার আমি পিঠিয়েছি। পরবর্তীতে তার ছেলে ক্লামং চাকমা একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে নিয়োজিত ছিল। কালক্রমে বিগত ৭/৮ বৎসর পূর্বে উক্ত ক্লামং সত্য নামে নিজেকে প্রকাশ করলে দূর-দুরান্ত থেকে আগত মানুষ পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে আমাদের তেলখোলা গ্রাম। পর্যায়ক্রমে তার নির্দেশিত ও প্রতিফালিত রহস্যজনক ধর্মীয় কার্যাদি সাধারণ মানুষের দৃষ্টিতে পড়ে।
এসব বিষয়ে আমরা ইসলাম সম্প্রদায়ের লোকজন কিছু বুঝি না। কারণ আমরা কোন প্রশ্ন করলে হয়ত: ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নানা প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যাক যে যার মত ধর্মীয় অনুশাসন পালন কর”ক। তাই ইসলামধর্মী সকল মানুষ উক্ত বিষয়ে তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায়নি। সর্বোপরি বিষয়টি রহস্যেজনক বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। উখিয়ায় সত্য ধর্মের প্রবর্তক নামে ক্লামং চাকমার রাজত্ব নিয়ে প্রতিবেদন করতে গেলে স্থানীয় ইউ.পি সদস্য মানিক চামকা কর্তৃক নির্দেশিত দূত ধারা উঁচু-নিচু পাহাড়ী দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে অবশেষে অবতীর্ণ হলাম সমতল ভুমি থেকে প্রায় ৩শ ফুট মত উচুতে অবস্থিত ক্লামং চাকমার হাতে তৈরি উপাসনালয় যেখানে সে ধর্মীয় কার্যাদি সম্পাদন করে।
উখিয়া নিউজ ডটকম এর অনুসন্ধান টীম উক্ত উপাসনালয়ের ভিতরে প্রবেশ করলে দেখতে পায়, তার স্বঘোষিত সত্য ধর্মের নিজস্ব কারিকুলামে তৈরি কিছু মুর্তি এবং ব্যতিক্রমধর্মী অঙ্কিত চিত্র, বাঁশ ও বেতের তৈরী রং বেরংয়ের কাগজের মোড়ানো ফুল। যা কোন ধর্মের রীতিনীতি কিংবা দৃষ্টিতে পড়ে না।
ওই পাহাড়ের একটু নিচে দেখতে পেলাম গহীণ অরণ্যে সুসজ্জিত মাচা বাড়ি। জানতে পারলাম এটি ক্লামং চাকমারই বসত বাড়ী। তার বাড়ির সামনে গেলে প্রথমে দেখা হয় ক্লামং চাকমার মায়ের সাথে। তার মায়ের কাছে ক্লামং চাকমা কোথায় জানতে চাইলে কোন প্রকার সুদুত্তর না দিয়ে তার পিতাকে ডেকে পাঠায়। তার পিতা মং বাউ চাকমা অনুসন্ধানী টীমের উপর ক্ষীপ্ত হয়ে বাঁধা দেয় এবং রীতিমত অনুসন্ধানী টীমকে উগ্র ভাবে তাদের নিজস্ব ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। যা আমাদের অনুসন্ধানি টিমের সাথে থাকা বৌদ্ধ ভিক্ষু শরণবোধি অবহিত করে। পরে জনপ্রতিনিধির প্রেরিত দূত মং বাউকে বুঝিয়ে বলে এরা সাংবাদিক। এদের সাথে কোন প্রকার অশোভন আচরণ যেন না করে। তারপর কিছুটা ন¤্রতা দেখে আমরা তার বাড়ির চর্তুদিক ঘুরে দেখে জানতে পারলাম যে, গহীণ অরণ্য হওয়া স্বত্ত্বেও তার বাড়িতে সুসজ্জিত চেয়ার-টেবিল, টিভি, সিডি, মাইক, সাউন্ড সিস্টেম এম, হারমোনিয়াম, তবলা, ঢোল সহ বিভিন্ন ধরণের বাদ্যযন্ত্র দেখতে পায়। তাছাড়া বাড়ির আঙ্গিনায় চোখে পড়ে বানর ও তার পালিত বিশাল আকারের একটি মোরগ। যার ওজন ৮/১০কেজি প্রায়।
ছেলের কিংবা তাদের পরিবারের মোবাইল নাম্বার জানতে চাইলে নাম্বার দিতে অসম্মতি প্রকাশ করে এবং ছেলে ক্লামং কোথায় জানতে চাওয়া হলে কোন প্রকার সহযোগিতা না করে উল্টো তার পিতা মং বাউ চাকমা বলে যা বলার আমাকে বলেন। (চাকমা ভাষায়- কি কদ্দে আরে খনা ম পুয়া জুমত গিয়ে গই)। তার কথায় ভিত্তি করে ক্লামং চাকমা প্রকাশ সত্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্লামং এর ২ স্ত্রী ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে বলে তিনি জানান। সত্যের প্রচারিত ধর্ম সম্পর্কে তার পিতাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এটা ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টান ধর্ম নয়। এটা সত্যের প্রবর্তিত সত্যধর্ম। বর্তমানে সত্যধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের অস্থিত্ব নেই বলেও তিনি দাবী করেন। এ সত্য ধর্মের প্রভাবে এলাকার লোকজনের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আমার রাজ্যে কোন প্রকার মদ, গাঁজা, চুরি, ব্যাভিচার কিংবা কোন প্রকার অবৈধ কার্যক্রম সংগঠিত হয় না বলেও জানান। তিনি আরও বলেন, “ক্লামং চাকমা কর্তৃক প্রচারিত সত্য ধর্মই বর্তমানে পৃথিবী শ্রেষ্ঠ ধর্ম” !
ছেলের সাংসারিক জীবনে আবদ্ধ হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে, তার একাধিক অনুসারীরা জানায়, সত্য ১ম স্ত্রীকে বিয়ে করার পর তার ধর্মীয় অনুশাসন পরিপূর্ণতায় ২য় বিয়ে প্রয়োজন হয়েছে বলে ক্লামং চাকমা প্রকাশ সত্য ভক্তদের মাঝে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।
তথাকথিত সত্য ধর্মের প্রবর্তক নামে খ্যাত ক্লামং চাকমার বাড়ির চর্তুদিকে ঘিরে সমতল এবং পাহাড়ী ভুমিতে গড়ে উঠেছে ভক্তদের বসত বাড়ী। যাদের নিকট থেকে প্রতিনিয়ত সে খাজনা আদায় করে থাকে। অপরদিকে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বনাঞ্চল। অনেকে তার দাবীকৃত খাজনা না দিতে অসম্মতি প্রকাশ করলে তার পিতা চক্রবর্তী রাজা হিসেবে তাদের উপর অমানসিক নির্যাতন চালায় বলেও অনেকে জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী চাকমা জানিয়েছে সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে ক্লামং চাকমা প্রকাশ সত্য গা ঢাকা দেয়। এদের মধ্যে অনেকে বলেন সে যদি সত্য ধর্মের প্রবর্তক হয়ে থাকে তাহলে সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাৎ করে প্রশ্নের উত্তর দিল না কেন ! যদি কয়েকজন মানুষের সাথে কথা বলার যোগ্যতা কিংবা সাহস না রাখে তাহলে সে কিভাবে সত্য ধর্মের প্রবর্তক হল ?
খোজ নিয়ে জানা যায় তার বাড়ি থেকে প্রায় ২ কি:মি: দক্ষিণ-পশ্চিমে পাহাড়ের চুড়ায় আরও একটি তার স্বঘোষিত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান (কাঁচা ঘর) রয়েছে। অনুসন্ধানি টিম ওখানে গিয়ে যা চোখে পড়ে ক্লামং চাকমা প্রকাশ সত্য’র শ্বশুর ননীল চাকমা (৫৭) কর্তৃক পরিচালিত সত্য ধর্মের অনুসন্ধান টীমের দেখা দ্বিতীয় উপাসনালয়, যা একটি বিশালাকার পাহাড়ের চুড়ায় অবস্থিত। সেখানে গিয়ে প্রথমে চোখে পড়ে, বিবস্ত্র প্রায় ৪০/৫০জন মত শিশু, তাদের নিজস্ব কায়দায় খেলাধূলায় মগ্ন।
অনুসন্ধানি টীমকে দেখে হঠাৎ তারা বিস্মিত হয় এবং রীতিমত তাদের মধ্যে হৈ হুল্লোড় শুরু হয়ে যায়। অনুমতি সাপেক্ষে তাদের তৈরী উপাসনালয়ে ঢুকে দেখি লম্বা চুল ওয়ালা এক ব্যক্তি তাদের নিজস্ব কায়দায় প্রার্থনারত। যা ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ কিংবা খ্রীষ্টান ধর্মে বিধি সম্মত নয়। এছাড়া উপাসনালয়ের ভিতরে অবস্থানরত ২০জনের অধিক সত্য ধর্মের অনুসারী লক্ষ্য করা যায়।
তাদের মধ্যে কেউ শুয়ে আছে, কেউ কেউ পাতার ছুরুট টানছে। আবার বাঁশের তৈরি মাচার উপর মন্দির প্রধান ননীল চাকমা (ক্লামং চাকমার শ্বশুর) কে ঘিরে ২/৩জন লোক কাগজ-কলমে কি যেন করছে। তার উভয় খুলে বসে আছে ক্লামং চাকমার ২ ছেলে-মেয়ে। ননীল চাকমার শরীরে লক্ষ্য করা গেছে, খালি গা ও মাথায় চুল, গলায় বড় পুতির ছড়া। যা প্রত্যেকের গলায় লক্ষ্য করা গেছে। পাশে একটি রং-বেরংয়ের কাগজে মোড়ানো আসন। যার সামনে উচিয়ে রাখা হয়েছে দারালো দা। আসনের ভিতরে একটি টেবিল ঘড়ি ছাড়া কিছু চোখে পড়েনি। দা এভাবে কেন রাখা হয়েছে জিজ্ঞেস করা হলে কোন প্রকার সুদুত্তর মেলেনি ! তারা অতি উৎসাহী হয়ে জানায়, সপ্তাহে প্রতি বৃহস্পতিবার এখানে সত্য ধর্মের বড়দিন হিসেবে বিশেষ অনুষ্ঠান করা হয়ে থাকে।
প্রার্থনারত ওই ব্যক্তিকে প্রার্থনা শেষে প্রশ্ন করা হলে, আপনি কোন ভাষায় কোন ধর্মের প্রার্থনা করেছেন ? তিনি বলেন, আমরা মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, হিন্দু কোন ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থনা করি না। একজন সত্য ধর্মের অনুসারী হিসেবে আমাদের নিজস্ব ভাষায় সত্য ধর্মের পুজা করেছি। প্রার্থনায় কি বলেছেন এমন প্রশ্নে, তিনি বলেন, আমি মদ, গাঁজা, চুরি, ব্যাভিচার করিব না, আমি সত্যধর্মকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং এ সত্যধর্মের প্রভাবে পৃথিবীর মঙ্গল কামনা করছি।
অপরদিকে ননীল চাকমাকে প্রশ্ন করা হলে ক্লামং চাকমা প্রকাশ সত্য ওই উপাসনালয়ে যায় কিনা ? তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে এসে সত্য ধর্মের নিয়ম-কানুন মেনে চলার উপদেশ দিয়ে যায়। তার অনুপস্থিতিতে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান বলে নিজেকে দাবী করেন। এছাড়া তাদের ছেলে-মেয়ে পড়াশুনা করে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, পড়াশুনা করে কি হবে ? শুধুমাত্র সত্য ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান থাকলেই চলবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, উক্ত গ্রামে একটি বৌদ্ধ মন্দির আছে। সেখানে সকাল সন্ধ্যা উপাসনা কিংবা ধর্মীয় কার্যাদি পালন করার সময় ক্লামং চাকমা প্রকাশ সত্য তার বাড়িতে থাকা মাইক ও বড় সাউন্ড সিস্টেম এম ছেড়ে দিয়ে উচ্চস্বরে গান বাজনা ও ঢাকঢোল পিঠিয়ে তাদের ধর্ম পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
উক্ত ক্লামং চাকমা প্রকাশ সত্য সম্পর্কে রামু উখিয়ার ঘোনার চান্দাচিরি ভিক্খু’র কাছে জানতে চাইলে তিনি উখিয়া নিউজ ডটকমকে বলেন, পৃথিবীতে ৪টি ধর্ম বিদ্যমান আছে জানি। তবে ক্লামং চাকমার প্রচারিত সত্য ধর্ম শুধুমাত্র মিথ্যাদৃষ্টি ছাড়া কিছু নয়। তার এসব মিথ্যা দৃষ্টিতে যারা সত্য ধর্ম নামে অপপ্রচারে অংশগ্রহণ করছে তারা অশিক্ষিত, নিরীহ, অসহায় পরিবার ছাড়া আর কেউ নয়। একই অভিমত ব্যক্ত করেন একাধিক ভিক্ষু সংঘ ও সচেতন এলাকাবাসীদের মধ্যে মেম্বার মানিক চাকমা, সাবেক মেম্বার কবির আহমদ, আব্দু সালাম, চয়পু সিং চাকমা, চিং চং চাকমা সহ একাধিক ব্যক্তি তাঁর এসব অপকর্ম বন্ধের দাবী জানিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ অংসাই থোয়ে উখিয়া নিউজ ডটকমকে বলেন, এ ব্যাপারে তিনি অবগত নন এবং তা খতিয়ে দেখবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। তবে কেউ যদি ধর্মের নামে অপপ্রচার চালায় এবং ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। সমাজের দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিত করে আইনের কাছে সোপর্দ করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।