ফরিদুল মোস্তফা খান, কক্সবাজার::
ধারণ ক্ষমতার ৫গুন বন্দি ও অভ্যন্তরীন অসংখ্য সমস্যা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে কক্সবাজার জেলা কারাগার। শুধু তাই নয় কারাগারটিতে আটক হাজতী কয়দিদের সাক্ষাতকারী স্বজনরাও পোহাচ্ছেন অন্তহীন দূর্ভোগে। চিকিৎসকের অভাবে অসুস্থ্য রোগীদের অবস্থা আরো বেহাল। ৫শত ৩০জন বন্দির ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এই কারাগারে বন্দি রয়েছেন ২হাজার ৬শ ১১জন। তৎমধ্যে পুরুষ ২হাজার ৪শ ৭৮ ও মহিলা রয়েছেন ১শ ৩৩জন। শিশু ও বিদেশী বন্দির সংখ্যাও ৩২৬জন।
জেল সুপার মোহাম্মদ বজলুর রহমান আখন্দ জানান, সরকারের নানা মুখী পদক্ষেপের কারনে এই কারাগারে বন্দিদের সকলে যেমন ভাল রয়েছেন, অনুরূপভাবে তাদের অসুবিধাও প্রকট। কর্তৃপক্ষের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা স্বত্বেও ধারণ ক্ষমতার ৫গুন বেশী বন্দি থাকা এই সব হাজতী কয়েদিদের উপযুক্ত সেবা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারণ বর্তমানে এই কারাগারটিতে স্থায়ী কোন চিকিৎসক নেই। একজন ফার্মাসিষ্ট থাকলেও প্রয়োজন আরো একজন। ডেপুটি জেলর আছেন একজন প্রয়োজন আরো একজন। প্রধান কারারক্ষীর একটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য। কারারক্ষী মহিলা সহ ৭৯জন থাকলেও ১০০জন কারারক্ষীও আটক এতগুলো বন্দিকে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে পারবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে।
সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে কক্সবাজার কারাগার থেকে বেরিয়ে আসা কয়েজন লোক কক্সবাজার আদালতে এই প্রতিবেদককে জানান, বর্তমান জেল সুপার মোহাম্মদ বজলুর রহমান আখন্দ এই কারাগারে যোগদানের পর থেকে সেখানকার দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতায় বন্দি সকলেই খাবার ও থাকা নিয়ে ভাল থাকলেও, কষ্ট পোহাচ্ছেন বাথরুম ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পানি নিয়ে। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দির কারণেই এই অবস্থা ক্রমশ প্রকট আকার নিচ্ছে বলে তাদের অভিমত। ডেপুটি জেলর অর্পণের সাথে এই বিষয়ে কিছু কথা বলতে চাইলে তিনি জানান, যেখানে ৩জন ডেপুটি জেলর দিয়েও কাজ হবে না, সেখানে তিনি একজনই আছেন গত প্রায় ২বছর ধরে। অতি ভোরে ঘুম থেকে ওঠে মধ্য রাত পর্যন্ত জাগনা থেকে কাজ করতে-করতে তিনি এখন হয়রান। এদিকে বুধবার কক্সবাজার কারাগার সরেজমিন পরিদর্শনে বন্দিদের সাক্ষাত কক্ষে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে বিরাজ করছে ভয়াবহ চিত্র। সাক্ষাত প্রার্থীদের সাথে কারা অভ্যন্তরে বন্দি বেশী থাকায় স্বজনরা পোহাচ্ছেন অন্তহীন দূর্ভোগ। বাহির থেকে কোন স্বজন ভিতরে থাকা তার কোন আত্মীয়কে ডাক দিলে জবাব দিচ্ছেন অন্যজন। স্বল্প পরিসরের একটি সাক্ষাত কক্ষে গাদাগাদি করে এতোগুলো লোক স্বজনদের সাথে কথা বলায় দৃশ্যটা দেখে মনে হবে, এই যেন মাছের বাজার। কাজেই এই অবস্থায় কক্সবাজার কারাগারের সব সমস্য গুলো চিহ্নিত করে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া এখন ভুক্তভোগী সকলের দাবি।